নিজস্ব প্রতিনিধি- বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির একাংশ কর্তৃক দলের নির্ধারিত সদস্য ফোরামের ১৬ জন সদস্যের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা নগর শাখার এক কর্মীসভা ১৮ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী। পরিচালনা করেন কমরেড সাইফুজ্জামান সাকন।
সভায় বক্তারা বলেন, “দলের অতীতের রাজনৈতিক সংগ্রামের ভুল-ভ্রান্তির সঠিক পর্যালোচনা এড়িয়ে গিয়ে মূল্যায়ন দাঁড় করালে তা যেমন সত্যকে প্রতিফলিত করে না, তেমনি চলার পথকে আরো অস্পষ্ট করে তোলে। এ দ্বারা জনগনের প্রতি দায়বদ্ধতার বুলি যতই আওড়ানো হোক না কেন, শেষপর্যন্ত তা দায়হীনতায় পর্যবসিত হয়। দলের নির্বাহী ক্ষমতাধারী নেতৃবৃন্দের অবস্থান এ নিরিখেই বিবেচিত হবে।”
বক্তারা আরো বলেন, “অভ্যন্তরীন সংগ্রামের যে সব সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী বা চিন্তার চর্চা দলের মধ্যে বিগত ৭ বছর ধরে হয়েছে, তাঁর সঙ্গে গণমানুষের সংগ্রামের কোনো সম্পর্ক ছিলো না। জনগণের নিত্য সংগ্রাম থেকে দূরে অবস্থান করে বা সে বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে ‘সঠিক’ ‘সঠিক’ বলে আওড়ানো তত্ত্বও শেষ পর্যন্ত সংকীর্ণ চিন্তার চোরাগলিতে হারিয়ে যায়। কর্মী-সংগঠকদের উৎসাহ-উদ্যমকে বিনষ্ট করে। বাসদ (মার্কসবাদী) দলের অভ্যন্তরে এমনটাই ঘটেছে। নেতৃত্বের সমালোচনা মানেই ‘একাত্মতার ঘাটতি’, ‘দলবিরোধী তৎপরতা’, অমান্যতা- এসব দৃষ্টিভঙ্গি যখন পূর্বেই স্থির করা থাকে, তখন নেতৃত্বের পক্ষে সমালোচনা গ্রহণ করার এতটুকু মনোভাবও আর বজায় থাকে না। আত্মসমালোচনার মুখোমুখী হতে নারাজ নেতৃবৃন্দ তখন নিজেদের ভুলকে তত্ত্ব করে আড়াল করার প্রচেষ্টা নেয়।”
নেতারা বলেন, “জনগণের সামনে আজ এক ভয়াবহ দুঃসময়। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের পক্ষে লাগাতার সংগ্রাম গড়ে তোলা সময়ের প্রয়োজন। বাস্তবতা হলো, এ প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে না। সমাজ-রাজনীতির গভীর অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণ এবং জনসম্পৃক্তির লক্ষ্যে নিরন্তর ক্রিয়া ছাড়া কোনো বিপ্লবী সংগ্রাম এগুতে পারে না। এরকম প্রেক্ষাপটে দল বিভক্তির যে কোনো ঘটনাই অপ্রত্যাশিত ও হতাশাব্যঞ্জক। এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার দায় আমাদেরও। জ্ঞানতাত্ত্বিক দূর্বলতা, জনসম্পৃক্তি ঘটতে না পারা, অন্ধ আনুগত্যের চর্চা ইত্যাদি বিষয় নেতা-কর্মীদের সিরিয়াস মনোভাবের ঘাটতি যেমন তৈরী করেছে, জনগণের প্রতি দায়বোধকেও দূর্বল করেছে। অতীতের এসব ব্যর্থতা-দূর্বলতা সংগ্রামের ধারায় কাটিয়ে আমাদের উঠতেই হবে।”
সভায় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বেলাল চৌধুরী, আশরাফুল হক মুকুল, হারুনুর রশিদ, গোলাম রাব্বানী, নজরুল ইসলাম সরকার, মঞ্জুরুল হক, বদরুল আলম, আলী নাঈম, সদরুল হাসান রিপন, সামজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক, ঢাকা নগর শাখার সহসভাপতি সায়েদুল হক নিশান, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক তানজিনা নিপা, পাঠাগার সম্পাদক অতনু মুখার্জী, সদস্য রাসেল সরদার, ইডেন কলেজ শাখার সহসভাপতি রাবেয়া কনিকা, অর্থ সম্পাদক স্কাইয়া, ঢাকা কলেজ শাখার আহ্বায়ক যুনযুন হাসান প্রমুখ।