নাবীন মাছুম, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।।
“সুস্থ দেহে সুন্দর মন”প্রচলিত এই প্রবাদটির সাথে সবাই কমবেশি পরিচিত। দেহ ও মনের এই সুস্থতা অনেকাংশেই নির্ভর করে নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধুলার উপর। আর খেলাধুলার জন্যে প্রয়োজন উপযুক্ত মাঠ বা খোলা ময়দান।
শহরের মতো গ্রামেও বিদ্যামান উপযুক্ত খেলার মাঠের সংকট,তার উপর যেগুলো রয়েছে,অযত্ন – অবহেলায় তাও আজ বিলুপ্তির পথে। মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতার এ যুগে একটি খেলার মাঠ যে ভূমিকা পালন করে,তা অবর্ননীয়।
ছবিতে দৃশ্যমান মাঠটি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় গুজাদিয়া ইউনিয়নে দামিনী নদীর তীরে অবস্থিত। খেলার এই মাঠ টি গুজাদিয়া আঃ হেকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর আওতাধীন হলেও শিবিরের মাঠ নামেই সমধিক পরিচিত।
সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় সবাই এই মাঠে খেলাধুলা করেন। শৈশবের দুরন্তপনা ছেলেমেয়েদের ছোঁয়ায় যেমন মুখরিত এই মাঠ,বয়সের ভারে নত হয়ে পড়া প্রজন্মের কাছেও মাঠটি কালের সাক্ষী। অথচ সবার আবেগের এই মাঠের আজ কি বেহাল দশা!
আরও পড়ুন>>
জানা যায়, মাঠের পাশেই গোপীনাথপুর গ্রাম। সে গ্রামের বাসিন্দারা মাঠের মাঝখান দিয়ে ভারী যানবাহনের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় মালামাল আনা-নেওয়া করে। ফলে মাঠে বিভিন্ন ধরনের গর্ত তৈরি হয় এবং বর্ষাকালে এতে পানি জমে কর্দমাক্ত এবং খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে ওঠে।
অথচ মাঠের পাশ ঘেষেই দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে রয়েছে চলাচলের রাস্তা। অলসতার দোহাই দিয়ে, ২ মিনিট সময় বাঁচাতে আর একটু ঘুরে যেতে হবে বলে তারা রাস্তা ব্যবহার না করে মাঠের মাঝ দিয়ে হাঁটাচলা এবং পণ্যবাহী ট্রাক, ট্রাক্টর,টলিসহ ভারী যানবাহন আনানেওয়া করে।এতে মাঠ নষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এমতাবস্থায় স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অবসর সময়ে খেলাধুলা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এতে তারা দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে যে,বারবার ব্যক্তিগত বা স্কুলের বাজেটে স্বল্প পরিসরে মাঠের সংস্কার কাজ করা হলেও এ ধরনের ক্ষতি হওয়ার প্রবণতা থামছে না। প্রতি বছরই বর্ষাকালে বা হালকা বৃষ্টিতে মাঠের এই বেহাল দশা দেখা যায়।
তাদের দাবি,স্কুলের উন্নয়ন তহবিল থেকে ছোট্ট ব্যয়েই এর সমাধান করা সম্ভব। বারবার ক্ষণস্থায়ী মেরামত থেকে বেরিয়ে এসে এর স্থায়ী সমাধানকল্পে মাঠের পূর্বপশ্চিম এবং দক্ষিণ পশ্চিম পাশে শক্ত বেড়া বা বাউন্ডারি করতে পারলে এর টেকসই সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তারা।”
তাছাড়া এলাকার সচেতন মহল বলছে, মাঠের আশেপাশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর একটা অংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে এলোপাথাড়ি মাঠ ব্যবহার করার ফলে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। মাঠ কর্তৃপক্ষ এর সিদ্ধান্তের পাশাপাশি এলাকার জনগণকেও এ বিষয়ে কঠোরভাবে সচেতন করতে হবে পাশাপাশি সার্বক্ষনিক নজরদারির জন্যে একটা মাঠ কমিটি গঠনের কথা জানান তারা।
উল্লেখ্য, এই মাঠেই গুজাদিয়া আঃ হেকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর আন্তঃ স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ফলে সর্বসাধারণ এর স্বার্থরক্ষার্থে এবং মাদকমুক্ত যুবসমাজ গড়তে ও মাঠকে খেলার উপযোগী করে তুলতে কতৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি এখন সময়ের দাবি।