পুলিশের নির্মম নির্যাতনের শিকার যশোর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া তিনটার দিকে হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। লীয় ও পারিবারিক উদ্যোগে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।
যশোর শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে তাকে নিতে আসা হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। এসময় দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থেকে বিপুকে সাহস যোগান। এসময় বিপু বলেন, ‘আমি নির্দোষ। অথচ আমাকে চোরের মতো পেটানো হয়েছে। আমি আপনাদের কাছে দোয়া কামনা করি। যাতে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারি।’
অভিযোগ করা হচ্ছে, সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে শহরের পুরাতন কসবায় নতুন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় সাদা পোশাকে থাকা কয়েক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গোলযোগ হয়। এসময় নিজের পরিচয় দিয়ে ও পরিচয়পত্র দেখিয়ে পুলিশ কনস্টেবল ইমরান এর প্রতিবাদ করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাকে মারপিট করে এবং অপহরণ করে পাশের আবু নাসের স্মৃতি সংসদ ক্লাবে নিয়ে যায়। ওই ঘটনার সময় সেখানে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুও ছিলেন। ক্লাবে নিয়ে ফের মারপিট করা হয় ইমরানকে। খবর পেয়ে পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ইমারানকে উদ্ধার ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ হাসান বিপুসহ চারজনকে হেফাজতে নেয়। প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরের পর মাহমুদ হাসান বিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর রাতেই অসুস্থ অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
মাহামুদ হাসান বিপুর অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে নির্মমভাবে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে। এমন নির্যাতন কেউ চোরের সাথেও করে না।
আরও পড়ুন>>
এদিকে বিপুকে চিকিৎসা প্রদানকারী অর্থোপেডিক সার্জন আব্দুর রউফ জানান, বিপুর শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তার ডায়বেটিস ধরা পড়েছে। তার সুস্থ হতে সময় লাগবে।
জানতে চাইলে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিপুকে শুধু নির্মম নির্যাতন করেনি পুলিশ এছাড়া ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে শহরের অনেক আ.লীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তিনি।
অবশ্য পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ আশরাফ হোসেন দাবি করেছেন, পুলিশ হেফাজতে বিপুকে কোনো প্রকার মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। উনি একজন সম্মানিত লোক জিজ্ঞাসাবাদের কিছু নিয়ম আছে সেগুলো মেনেই আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ওনাকে হেফাজতে মারার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তারপরও অভিযোগ যেহেতু আসছে সে কারণে সিনিয়র কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত টিম করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কোনো ব্যত্যয় হলে তা তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই বলা সম্ভব হবে।
এদিকে পুলিশ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিপুর সঙ্গে আটক শাহিনুজ্জামান তপু ও ইমামুল হককে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। এছাড়া অন্যরা নিরাপরাধ হওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি।