জার্মানিতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশটিতে ১৮ বছর বয়স থেকে সব নাগরিকদের জন্য করোনার টিকা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে ভাবছে ওলাফ শলজ সরকার। এদিকে, ওমিক্রনের পর করোনার নতুন আরো ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জার্মান সংক্রামক বিশেষজ্ঞরা।
কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরও জার্মানিতে ঠেকানো যাচ্ছে না ওমিক্রন সংক্রমণ। গত কয়েক দিন ধরে দেশটিতে যেন চলছে সংক্রমণের মহোৎসব। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে কখনো ৭০ হাজার তো কখনো ৮০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন করোনায় শুক্রবার মারা গেছেন কমপক্ষে তিনশজন।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিনামূল্যে জার্মান প্রশাসনের টিকা দেয়ার পাশাপাশি জারি রয়েছে নানা বিধিনিষেধ। তবে ভ্যাকসিন নিয়ে সাধারণ মানুষের অনীহার কারণে তা কোনো কাজে আসছে না। এই অবস্থায় করোনাকে বশে আনতে ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে সরকার। আইন করে হলেও প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকার আওতায় আনার সরকারের পরিকল্পনার বিষয়টি গণমাধ্যমে তুলে ধরেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী কার্ল লাউটারবাখ।
তিনি বলেন, দেশের করোনার বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের সবাইকে অত্যন্ত দুঃশ্চিন্তায় ফেলে দেয়ার মত। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৮ বছর বয়স থেকেই জার্মানির সাধারণ নাগরিক, স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বসবাসরত সকলকেই করোনা ভ্যাকসিন গ্রহনের বাধ্য বাধকতার বিষয়টি নিয়ে সরকার চিন্তা ভাবনা করছে। তা না হলে সামনের দিনগুলোতে আমরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এমন কি উঠে দাঁড়ানোটাও অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এদিকে ডেল্টার পর যেমন করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ছড়িয়েছে ঠিক তেমনি সামনের দিনগুলোতে নতুন আরো ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের ছড়াতে পারে এমন আশংকার কথা জানিয়েছেন দেশটির বিশিষ্ট সংক্রামক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিয়ান ড্রসটেন।
তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে করোনা যেভাবে রুপ পাল্টেছে তেমনি ডেল্টা ওমিক্রনের পর হয়তো নতুন করে অন্য এক ভ্যারিয়েন্ট ধেয়ে আসতে পারে। যা হবে আমাদের সবার জন্য দুর্ভাগ্যের। তাই টিকা গ্রহণের মাধ্যমে আসছে শীতের মধ্যেই আমাদের সকলের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোটা খুবই জরুরী।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ জানিয়েছেন, করোনা নিয়ে দোটানায় পড়া টিকায় অনাগ্রহীরা এগিয়ে না এলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। এদিকে স্বাস্থ্য সংস্থা রবার্ট কক ইন্সটিটিউট জানিয়েছে জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ১ম ডোজ নিয়েছেন ৭৪ দশমিক ৯ শতাংশ, ২য় ডোজ ৭২দশমিক ৫ আর বুস্টার ডোজ নিয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা শতকরা ৪৫ দশমিক ৯ শতাংশ।