Wednesday, March 22, 2023

মেসি-রোনালদো না থাকলে কি তিনিই হতেন সময়ের সেরা?

Date:

এ সম্পর্কিত পোস্ট

এমবাপ্পেকে অধিনায়ক করায় গ্রিজম্যানের অবসরের হুঁশিয়ারি

কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফ্রান্সের অধিনায়ক করায় চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন...

রকেট হামলায় পিটিআই নেতাসহ নিহত ১০

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি গাড়িতে রকেট হামলার ঘটনা...

এবার আইসিসির আইনজীবী ও বিচারকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার মামলা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির তিন...

বিশ্বকাপ ফুটবলে জয় লাভের স্বপ্ন দেখালেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা একদিন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলব।...

কিশোরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড...

মেসি-রোনালদোর পর বিশ্বের তৃতীয় সেরা ফুটবলার কে? এমন বিতর্কে সবার আগে আসে নেইমারের নাম। ব্রাজিলের ইতিহাসের পেলের সঙ্গে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমার এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ বা ব্যালন ডি’অর জিততে না পারলেও ব্রাজিলের সেরাদের কাতারেই রাখা হয় পিএসজির এই তারকা ফুটবলারকে। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে বিশ্ব মাতানো নেইমার আজ পা দিয়েছে ৩১ বছর বয়সে।

১৯৯২ সালে জন্ম নেয়া নেইমারের নাম ব্রাজিলের ফুটবলে একটু একটু করে জোরালো হচ্ছিল ২০০৯ সাল থেকেই। পেলের ক্লাব সান্তোসের হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করা ১৭ বছর বয়সী তরুণ দারুণ আলোড়ন তুলেছিলেন দেশটির ফুটবলে। তাই তো ২০১০ বিশ্বকাপেই তাকে দলে নেয়ার জন্য কোচ দুঙ্গার ওপর চাপ তৈরি করছিল ব্রাজিলের সমর্থকরা। ইউরোপেও নেইমারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এই সময়। ব্রাজিলের বিস্ময়বালককে দলে ভেড়াতে লোভনীয় প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয় ওয়েস্ট হ্যাম ও চেলসির মতো ক্লাব। তবে নেইমার তখনই দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক ছিলেন না।

২০১১ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে অভিষেক নেইমারের। সেই তখন থেকেই সাম্বার দেশের ফুটবলের প্রাণ তিনিই। সেদিনের তরুণ নেইমার এখন ৩১ বছরে এসে পূর্ণ এক ফুটবলার। ২০১৪ বিশ্বকাপে তার অসাধারণ নৈপুণ্যে দল সেমিফাইনালে উঠলেও মারাত্মক এক ফাউলের শিকার হয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। ব্রাজিলও বিদায় নেয় বিশ্বকাপ থেকে।

২০১১ সালে নেইমার তার ক্লাব স্যান্তসকে দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খ্যাত কোপা লিবার্তোদেরেস জেতান। যা ছিল ক্লাবটির ১৯৬৩ সালের পর প্রথম মহাদেশীয় শিরোপা। তার এমন নৈপুণ্য দেখে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা তাকে পেতে উঠেপড়ে লাগে।  

অবশেষে ২০১৩ সালে নেইমার বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। সে সময়ে দলবদলের বিস্তারিত কোনোকিছু নেইমার বা ক্লাব কেউই প্রকাশ করেনি। ২০১৩ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কনফেডারেশন কাপের পর তাকে ন্যু ক্যাম্পে উপস্থাপন করা হয়।

বার্সেলনায় এসে প্রথম মৌসুমেই লিগে ২৬ ম্যাচে ৯ গোল ও ১০ অ্যাসিস্ট করেন তিনি। সব মিলিয়ে সে মৌসুমে ৪১ ম্যাচে ১৫ গোল ও ১৫ অ্যাসিস্ট করেন নেইমার। বার্সায় নিজের দ্বিতীয় মৌসুমে মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে ক্লাবটির ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী ত্রয়ী গড়ে তোলেন তিনি। সে মৌসুমে বার্সার হয়ে ট্রেবল জেতেন। লা লিগায় ৩৩ ম্যাচে ২২ গোল করা নেইমার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০ গোল নিয়ে হন সর্বোচ্চ গোলদাতা। বার্সেলোনার পঞ্চম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন নেইমারই। এরপর আরও দুই মৌসুম বার্সেলোনায় কাটান নেইমার। ক্লাবটির হয়ে সবমিলিয়ে ১৮৬ ম্যাচে ১০৫ গোল ও ৭৬টি অ্যাসিস্ট করেন নেইমার।

২০১৭ সালে দলবদলের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফরাসি লিগের দল প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি) পাড়ি জমান নেইমার। তাকে দলে ভেড়াতে পিএসজির খরচ করতে হয় ২২২ মিলিয়ন ইউরো। ক্লাবটিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এনে দেয়ার অঙ্গীকার করে এলেও ইনজুরি সমস্যা ও মাঠের বাইরের নানা ঘটনাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে ব্যর্থ হন তিনি। ক্লাবটির হয়ে নিয়মিত লিগ ও ঘরোয়া কাপের শিরোপা জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভাগ্যটা সহায় হয়নি তার। ২০১৯-২০ মৌসুমে অবশ্য ফাইনালে উঠেও ছুঁয়ে দেখা হয়নি শিরোপাটা। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় দল।

২০১০ সালের বিশ্বকাপের পর ব্রাজিল দলে অভিষেক হয় তার। ১০ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচের গোল করেন নেইমার। ২০১২ সালের অলিম্পিকে অধরা স্বর্ণ জিততে নেইমারকে দলে নিয়ে অলিম্পিকে যায় ব্রাজিল। গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ পারফর্ম করে সেবার ব্রাজিলকে ফাইনালে তোলেন তিনি। তবে ফাইনালে মেক্সিকোর কাছে হেরে ধূলিসাৎ হয় সেলেসাওদের স্বর্ণস্বপ্ন।

২০১৩ কনফেডারেশন কাপের শিরোপা জেতে ব্রাজিল। গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ পারফর্ম করে সেরা খেলোয়াড় হন নেইমার। ২০১৪ বিশ্বকাপে নেইমারের কাঁধে ভর করে নিজ দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন দেখে ব্রাজিল। টুর্নামেন্টে শুরুটাও হয় দারুণ। প্রথম ম্যাচেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দারুণ বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল করেন তিনি। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ভালোই যাচ্ছিল সেবার নেইমারের জন্য। তবে এক ইনজুরিই তার দলের বিপদ ডেকে আনে। সেমিফাইনালে ব্রাজিল বিধ্বস্ত হয় ৭-১ গোলে। ইনজুরির কারণে সেই ম্যাচে খেলতে পারেননি নেইমার।  

২০১৬ অলিম্পিক ফুটবলে নেইমারের নেতৃত্বে খেলতে যায় ব্রাজিল। সে আসরে নেইমার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ব্রাজিলকে ফাইনালে তোলেন। ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জিতে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ জেতে ব্রাজিল।

ব্রাজিলের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ১২৪ ম্যাচ খেলে ৭৭ গোল করেছেন নেইমার। ব্রাজিলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা পেলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এখন নেইমারের নামও।

সর্বশেষ সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here