Homeআন্তর্জাতিকতুরস্ক কেন বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ

তুরস্ক কেন বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ

তুরস্কে ভূমিকম্প একটি নিয়মিত ঘটনা। কতটা নিয়মিত তার একটি উদাহরণ হয়ে থাকতে পারে ২০২০ সাল। ওই বছর দেশটিতে সব মিলিয়ে ভূমিকম্প হয়েছিল ৩৩ হাজার বারেরও বেশি। এর মধ্যে রিখটার স্কেলে চার মাত্রার বেশি ভূমিকম্প ছিল ৩২২টি। কিন্তু তুরস্কে কেন এত বেশি ‍ভূমিকম্প হয়?

তুরস্কে একটি প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে: ‘জমিনই নিয়তি।’ এই প্রবাদ থেকেই স্পষ্ট যে তুর্কিরা ভূমিকম্পের সঙ্গে কতটা পরিচিত। তবে ভূমিকম্পে তুরস্কের এত নাজুক হওয়ার মূল কারণ এর ভৌগোলিক অবস্থান। দেশটি মূলত বেশ কয়েকটি টেকটোনিক প্লেটের, যা ভূমিকম্পের জন্য দায়ী, ওপর অবস্থিত। 

দেশটির মূল অবস্থান আনাতোলিয়ান টেকটোনিক প্লেটের ওপর। তবে এর বাইরে দেশটি আরও দুটি মহাদেশীয় টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থান করছে। সেই প্লেট দুটি হলো ইউরেশিয়ান ও আফ্রিকান টেকটোনিক প্লেট। এ ছাড়া আরও একটি প্লেট এই অংশে এসে সংযুক্ত হয়েছে। সেটি হলো অ্যারাবিয়ান প্লেট। ফলে এসব প্লেটের কোনো একটির সামান্য নড়াচড়ার অর্থই হলো ভূমিকম্পের ‍সৃষ্টি হওয়া।

দেশটির জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক ফল্ট লাইন বা টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল হলো উত্তর আনাতোলিয়ান ফল্ট লাইন। যেখানে আনাতোলিয়ান এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেট মিশেছে। উত্তর আনাতোলিয়ান ফল্ট লাইনটি ইস্তাম্বুলের দক্ষিণ থেকে তুরস্কের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। তুরস্কের ইতিহাসে যত ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে তার অধিকাংশের পেছনেই এই ফল্ট লাইনের বিচ্যুতি দায়ী। 

পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট লাইনের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৬০০ কিলোমিটার, যা পূর্ব তুরস্ক থেকে ভূমধ্যসাগরের উচ্চভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত। পরে সেখান থেকে এটি দক্ষিণ দিকে বাঁক নিয়ে গ্রেট রিফট সিস্টেমের সঙ্গে মিলিত হয়, যা আবার আফ্রিকান টেকটোনিক প্লেট থেকে অ্যারাবিয়ান প্লেটকে পৃথক করে। খাড়া এই প্লেটটি গঠিত হয়েছিল কয়েক লাখ বছর আগে। পশ্চিম তুরস্কে ভূমিকম্পপ্রবণ হওয়ার কারণ হলো আরও একটি ছোট টেকটোনিক প্লেট, যা ইজিয়ান সাগর প্লেট নামে পরিচিত। 

বেশ কয়েকটি বড়-ছোট টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থানের কারণে তুরস্ক অতীতে বেশ কয়েকবার ভয়াবহ ভূমিকম্পের মুখোমুখি হয়েছে। যেসব ভূমিকম্পে নিহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। যাইহোক, অদূর ভবিষ্যতেও তুরস্ক আরও ভয়াবহ ভূমিকম্পের মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে তুরস্কের প্রাচীন নগরী ইস্তাম্বুল অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

সর্বশেষ খবর