Homeশীর্ষ সংবাদ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে চূড়ান্তভাবে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে চূড়ান্তভাবে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের

এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর কাঠামোর বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের প্রতিশ্রুতি নবায়নের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২৬ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে চূড়ান্তভাবে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের।

রোববার (০৫ মার্চ) কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) উদ্বোধনী পর্বে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশ সংকটে দিন পার করছে। তাই এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর কাঠামোবদ্ধ রূপান্তরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের প্রতিশ্রুতি নবায়ন করতে হবে।

বিশ্বের স্বল্পোন্নত ৪৬টি দেশ নিয়ে গঠিত জাতিসংঘের বিশেষায়িত প্ল্যাটফর্ম এলডিসি। এ বছর দোহায় ‘সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি’ প্রতিপাদ্যে জাতিসংঘের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এলডিসি-৫ শিরোনামে। রোববার দেশটিতে সফরের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই, কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার-কিউএনসিসিতে এলডিসি ৫ এর উদ্বোধনী পর্বে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় সকালে আয়োজিত এ সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতি ও জাতিসংঘের মহাসচিব বক্তব্য রাখেন।

এরপর, বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাঁচ দশক ধরে স্বল্পোন্নত দেশের প্রতিনিধিত্ব করে আসা বাংলাদেশ ২০২৬ সালে চূড়ান্তভাবে বেরিয়ে যাবে এ প্ল্যাটফর্ম থেকে। এ পথ অতিক্রমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশই অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এ সময় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতেও কোনো সমাধান ছাড়াই দিনের পর দিন এ জনগোষ্ঠীর বোঝা টানার ব্যথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ এখন দ্রুত বর্ধনশীল ডিজিটাল অর্থনীতির দেশ দাবি করে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ব্যাপকহারে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে শনিবার বিকেলে কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষ ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ যত দ্রুত শেষ হবে; ততই জনগণের জন্য মঙ্গল হবে। জাতিসংঘ মহাসচিব যত দ্রুত সম্ভব চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নাগরিকরা যাতে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী এ সম্মেলনে যোগ দিতে দুপুরে  কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছান।

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-৩২৫) শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কাতার সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি এবং কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। পরে একটি আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনাকে বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে যাত্রা করে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এ সম্মেলনে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে সহজ উত্তরণের জন্য বৈশ্বিক সমর্থন চাইবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ৫-৯ মার্চ দোহায় অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ‘এ’ গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে এটি ঢাকার শেষ অংশগ্রহণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে ফোরাম থেকে উত্তরণ লাভ করতে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি এলডিসি ৫ সম্মেলনে তার অংশগ্রহণ ছাড়াও কাতারের আমিরসহ অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

আগামী বুধবার পর্যন্ত কাতারে অবস্থানকালে কাতারের আমিরের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। জ্বালানি খাতে সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পাবে।

সর্বশেষ খবর