মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে বিপিএলের সুপারম্যান বলাই যায় । তার অতিমানবীয় ক্ষমতাতেই হয়তো কাগজে-কলমে দুর্বল সিলেট এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। তবে এই মাশরাফীকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দেন যিনি, সেই স্ত্রী সুমনা হক সুমির কাছে ম্যাশ একা নন; এই জয়ের কৃতিত্ব পুরো দলের।
বিপিএলে অপয়া সিলেট। যখন যে হাতে নিয়েছে এর দায়িত্ব। সেই ভুগেছে বাজেভাবে। তাই তো, ফ্রাঞ্চাইজি ভাগাভাগির সময়ে যখন মাশরাফীর ভাগ্যে জুটল সিলেট, তখন হায় হায় পড়ে গিয়েছিল ক্রিকেট পাড়ায়। সবার ধারণা ছিল, এবার হয়তো ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিকের কপাল পোড়াবে অপয়া সিলেট। কিন্তু হলো ঠিক তার উল্টো। নড়াইল এক্সপ্রেস দেখিয়ে দিলেন তার ম্যাজিকে কুপোকাত সব দুর্ভাগ্য। তিন ম্যাচে তিন জয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন ১২ আউলিয়ার শহর।
তবে, যে মাশরাফীর হাত ধরে এত সাফল্য, তাকেই একক কৃতিত্ব দিতে চান না তার ঘরের মানুষ। যদিও ম্যাশকে সুপার হাজবেন্ড বলতে কোনো দ্বিধাই কাজ করেনি সুমনা হক সুমির মাঝে। পুরো দলকে কৃতিত্ব দিলেও বিশেষ কোনো ক্ষমতা যে আছে তার স্বামীর, সেটা মেনে নিচ্ছেন সুমি। আর মেয়ে হুমায়রার চোখে তো বাবা বরাবরই স্পেশাল। বিশ্বাস তার বাবা পারবে অপয়া সিলেট ফ্রাঞ্চাইজিকে শিরোপা এনে দিতে।
সুমি বলেন, ‘তাকে সুপারম্যান বলব না কিন্তু সে আলাদা। হাজব্যান্ডের জায়গা তো আলাদা, সে অবশ্যই সুপার হাজব্যান্ড। শুধু মাশরাফীকে নিয়ে যদি বলি তবে অন্য খেলোয়াড়দের প্রতি অন্যায় করা হবে। একটা জয় শুধু একজনের জন্য না, গোটা টিমের জন্যই। ‘
ম্যাজিকে বিশ্বাস করেন কি না সেটা বলেননি মাশরাফীর অর্ধাঙ্গিনী। তবে ম্যাশের কাছে যে বিশেষ কোনো ক্ষমতা রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন। না হলে, এ বয়সে এবং এই ফিটনেস নিয়েও বিপিএল মানেই কেন হবে মাশরাফীর জয়জয়কার।
সুমির ভাষায়, ‘তার কাছে ঈশ্বরপ্রদত্ত কিছু একটা আছে বা ওর কনফিডেন্সের কারণেই হয়তো সব সম্ভব হয়। লিডারশিপ একটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বলে মনে করি। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দর্শক যেটা ভাবছে, সবাই যেটা ভাবছে, আমিও সেটাই বলব। মাঠে আসলাম, দেখলাম। বাসায় যতটা পারি মেন্টাল সাপোর্ট দেই। সাপোর্টটা আসলে গুরুত্বপূর্ণ। মাঠে থেকেই দিতে হবে এমন নয়, শান্তিটাই আসল।’
তবে, মার মতো এত ডিপ্লোমেটিক নন মেয়ে হুমায়রা। বাবা ম্যাশ তার কাছে বরাবরই বিশেষ কিছু। আশা, সিলেটের দুর্ভাগ্য কাটবে তার বাবার হাত ধরেই।
হুমায়রা মোর্ত্তজা বলেন, ‘তোমাদের দোয়ায় আজকে জিতলাম। আর দুটো ম্যাচ জিতলেই পরের রাউন্ডে চলে যাব। তারপর আমি বললাম, আমাদের দোয়া সবসময় থাকবে। ইনশাআল্লাহ, পরের ম্যাচেও তোমরা জিতবে।’
পরের ম্যাচে ঢাকা ডমিনেটরেসের বিপক্ষে লড়বে মাশরাফীর সিলেট স্ট্রাইকার্স।