দেশ ছাড়তে চাওয়ায় নিজের ইউটিউবার মেয়েকে হত্যা করেছেন এক বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ দিওয়ানিয়ায়। এতে ওই বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটিকে ‘অনার কিলিং’ বলে মনে করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে অধিকারকর্মীরা।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরাকে পরিবারের ‘সম্মান রক্ষা’য় নিয়মিতই হত্যার ঘটনা ঘটে। যাকে ‘অনার কিলিং’ বলা হয়। এ ধরনের সবশেষ ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি)। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের টুইটার বার্তায় বিষয়টি প্রথম সামনে আসে।
সাদমান নামে ওই মুখপাত্র জানান, তিবা আল-আলি নামে ২২ বছর বয়সী এক তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে। দেশ ছেড়ে তুরস্কে একাকী বাস করতে চাওয়ায় তাকে তার বাবা হত্যা করেছেন। তবে ঘাতক ওই বাবার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সাদমান জানান, তিবা আল-আলি আগে থেকেই তুরস্কে থাকতেন। সম্প্রতি দেশে বেড়াতে আসেন তিনি। এরপর তিবা আবারও তুরস্কে ফিরে যেতে চাইলে শুরু হয় বাবা-মেয়ের দ্বন্দ্ব। বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তার আগেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে যায়।
মেয়ের তুরস্কে একাকী বসবাস করার বিষয়টি নিয়ে মনঃক্ষুণ্ণ ছিলেন বাবা। বেড়াতে এসে আবারও তুরস্কে ফিরে যেতে চাইলে মেয়ের সঙ্গে বাবার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একটি অডিও ক্লিপও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
সাদমান বলেন, বাবা-মেয়ের বিবাদ মেটানোর জন্য তাদের সঙ্গে কথা বলেছিল পুলিশ। কিন্তু পরের দিনই হত্যার খবরটি পেয়ে আমরা বিস্মিত। তবে ঠিক কি কারণে ওই বাবা মেয়েকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটালেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
তিবা আল-আলি একজন ইউটিউবার ছিলেন। জনপ্রিয় সামাজিক প্লাটফর্মটিতে তার অসংখ্য ভক্ত-অনুসারী ছিল। এতে নিজের দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কিত পোস্ট করতেন তিনি। পুলিশের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ওই পরিবারে এই দ্বন্দ্বের শুরু এখন থেকে ৮ বছর আগে সেই ২০১৫ সালে।
এরপর ২০১৭ সালে পরিবারের সঙ্গেই তুরস্কে যান তিবা। কিন্তু পরিবার ইরাকে ফিরে এলেও তিনি তাদের সঙ্গে ফিরতে অস্বীকৃতি জানান। একাকী তুরস্কে থেকে যান তিনি। সম্প্রতি দেশে বেড়াতে আসেন। এরপরই বাবার হাতে হত্যার শিকার হলেন।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ইরাকে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অফলাইনে ও অনলাইনে এ ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকেই। প্রতিবাদ জানিয়েছেন অধিকারকর্মীরা। সুষ্ঠু বিচার চাইছেন তারা।