তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি প্রদেশ। প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। যারা বেঁচে ফিরেছেন তাদের অনেককেই বরণ করতে হয়েছে পঙ্গুত্ব, স্বজন হারিয়ে কেউবা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন অনেকেরই ঠাঁই হয়েছে ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন হাসপাতালে।
তুরস্কে ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে অনেককে। এদের কেউ কেউ এখনও জানেন না তাদের পরিবার-স্বজনরা কোথায় আছেন, কেমন আছেন। আবার কেউ নিজের স্বামী-সন্তানের পচঁনধরা মৃতদেহের সঙ্গেই চাপা পড়ে ছিলেন ধ্বংসস্তূপের নিচে। শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এসব মানুষের চিকিৎসা চলছে ইস্তাম্বুলের কয়েকটি হাসপাতালে।
বিভিন্ন বয়সী অসুস্থ রোগীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে তাদের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে, দিয়েছেন উদ্ধার হওয়ার খুঁটিনাটি বিবরণও।
ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ভূমিকম্পের পর আমি আমার স্বামীর সঙ্গে (ধ্বংসস্তূপের নিচে) কথা বলেছিলাম। সে আমার মাথার পাশেই ছিল। আমার সন্তানদের স্পর্শ করতে পেরেছিলাম। পরের দিন যখন ওরা মারা যায়, ওদের শরীর ফুলতে শুরু করে। তখন আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল।
এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, শারীরিক এবং মানসিকভাবে চাপে থাকার ফলে এসব রোগীরা ‘ক্র্যাশ সিনড্রোম’ নামক জটিল এক মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও বিকলাঙ্গতা, কিডনি বিকলের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্কের আদিয়ামান, গাজিয়ানতেপ, আনতাকিয়া, হাতায়াসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি প্রদেশ পুরোপুরি ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়াও ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু অবকাঠামো। বেঁচে গেলেও এখন তীব্র ঠান্ডা, বিদ্যুৎহীন ও গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।