খাগড়াছড়ি পানছড়ির সীমান্ত সড়কের ৪টি পাকা সেতু ভেঙ্গে প্রকাশ্যে রড চুরি করে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দিনদুপুরে এ ঘটনা ঘটলেও এখনো জড়িতদের খুঁজে বের করতে পারেনি প্রশাসন।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ করে চারটি পাকা সেতু নির্মাণ করে সরকার। এর মধ্যে লোগাং ইউনিয়নে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি সেতু নির্মাণ করেছে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় অন্য দুইটি নির্মাণ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।
সম্প্রতি এই এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মিত হওয়া স্থানীয়রা সেতুগুলো যোগাযোগের বিকল্প মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছিল। তবে চলতি মাসের শুরুতেই সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এসব সেতু ভেঙে রড চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো- দুর্ধর্ষ এ কাজ সম্পন্ন হয়েছে দিনের আলোতেই।
প্রত্যক্ষদর্শী রমিতা চাকমা, মো. হেলাল, জয়নাথ দেব ও মো. শাহ আলম জানিয়েছে, টানা সাতদিন ধরে একদল যুবক সেতুগুলো ভেঙে গাড়িতে করে রড নিয়ে গেছে পানছড়ির দিকে। তবে তাদের কাউকেই তারা চিনতে পারেননি। তাছাড়া কার নির্দেশে সেতু ৪টি ভাঙা হয়েছে সেটাও তারা সেটা জানেন না। ঘটনার পর পর ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় পানছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে পানছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।
তিনি জানান, এ সেতুগুলো ভেঙে রড চুরি হওয়ার বিষয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ঠিকাদারদের একটি সঙ্গবদ্ধ দল জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি সেতু ভেঙে রড চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবি করেছেন।
এদিকে পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মোমিন এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দিনদুপুরে ৪টি ব্রিজ ভেঙে রড চুরি করা এটা দুঃসাহসিক কাজ। তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার নাঈমুল হক বলেন, যেহেতু সেতু ভেঙ্গে রড চুরি হওয়ার বিষয়ে থানায় জিডি হয়েছে। তাই তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত দোষীদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে দোষীদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে পুলিশ। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান সেতু ভেঙে রড চুরি হওয়ার বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা প্রশাসন পানছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। পুলিশি তদন্তের পরে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের পরিচয় বের হলে সরকারি সম্পত্তি চুরি করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।