“নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ”-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বগুড়ার শেরপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল দশটায় উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে
এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে একটি র্যালী উপজেলা চত্বর প্রদক্ষিণ করে।
এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহজামাল সিরাজি। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শেরপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, সাংবাদিক সাইফুল বারি ডাবলু, কৃষক লীগের বগুড়া জেলার সহসভাপতি এসএম আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শারমিন আক্তার প্রমূখ।
বক্তাগণ বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী চাহিদার চেয়েও বেশি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। এসব ব্যক্তি উদ্যোগে পুকুরে চাষ করে উৎপাদিত মাছ স্থানীয় অর্থনীতিতে জোড়াল ভূমিকা রাখছে। কিন্তু অন্যদিকে মুক্ত জলাশয়ে নদী, নালা, খাল ও বিলে মাছের প্রজনন ও বিস্তার প্রায় শুণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এর কারণ হিসেবে তারা খাল ও বিল সংস্কারের উদ্যোগহীনতা ও দখল হয়ে যাওয়াকে দায়ি করেছেন। এছাড়াও শেরপুরের উপর দিয়ে বয়ে গেছ করতোয়া ও বাঙালী নদী। এই নদীগুলোও এখন মৃতপ্রায়। এছাড়া স্থানীয় এসআর কেমিক্যাল ইন্ডস্ট্রিজ ও মজুমদার প্রডাক্টস লিমিটেড নামক দুইটি শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নদী দুটিতে ফেলা হয়। এর ফলে নদীগুলোতে কোন মাছ নেই, নেই কোন জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণি। এমনকি পানিও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে বারবার কথা বলা হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে নদীর উপকূলে বসবাসরত মৎস্যজীবিরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
এদিকে উপজেলার জলাভূমিগুলো ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যপক অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছন বক্তারা। তারা বলেন, সরকারি পুকুর গুলো প্রকৃত মৎস্যজীবিদের কাছে ইজারা দেওয়ার কথা। কিন্তু সরকারি দপ্তরের অবহেলার কারণে বেশির ভাগ মৎস্যজীবি সমিতিগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীদের নামে নিবন্ধন করা হয়েছে। কোথাওবা প্রকৃত মৎস্যজীবিদের সমিতি পুকুর ইজারা পেলেও তা অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়। এটা আইন বহিঃর্ভুত। এজন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের সরকারি প্রচেষ্টা ব্যহত হচ্ছে। তারা এসব অনিয়ম দূর করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহবান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মির্জাপুর ইউনিয়নের রতন সরকারকে উপজেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষী ঘোষনা করা হয়। এর পরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে শেরপুর উপজেলার সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকার মৎস্যজীবি, চাষী, মৎস্য খাদ্য উৎপাদক ও পরিবেশক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।