উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী গ্রাম থেকে একাধিক মানব পাচার মামলার প্রধান আসামি মো.শাকিল হোসেনকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, বুধবার (৬ ডিসেম্ববর) গভীর রাতে খুলনার হরিণটানা থানার এস.আই রফিকুল ইসলাম পুলিশ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কালিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় ফোন কল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে উক্ত আসামিকে আটক করে। আসামি মো.শাকিল হোসেন চাঁচুড়ী গ্রামের মৃত.ছাব্বির রহমান ওরফে মনু মোল্যার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ তাসমীম।
অভিযোগে জানা যায়, উক্ত আসামি দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচারের সাথে জড়িত রয়েছে। তিনি সংঘবদ্ধ মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে গ্রামের সহজ-সরল নিরীহ অসংখ্য সুন্দরী নারীসহ বিভিন্ন মানুষদের উচ্চ বেতনে বিদেশ নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নগদ টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে ভারত,মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিক্রি করে দেয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মানব পাচারের মামলা চলমান রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মো.শাকিল হোসেন তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল উপজেলার কদমতলা গ্রামের খাজা মিয়া শেখের মেয়ে মিতা খানমকে ফ্রান্সে পাঠানোর উদ্দেশে চোরাই পথে ভারতে পাঠিয়ে দেয়। পরে সেখানে জিম্মি করে আরও সাত লাখ টাকা দিলে তাকে ফ্রান্সে পাঠাবে বলে কথা দেয় তার পরিবারকে।
কিন্তু তাদের কথা অনুযায়ী সাত লাখ টাকা দেওয়ার পরও তাকে ফ্রান্সে নেয়ার পরিবর্তে ভারতে বোম্বের কংগ্রেস হাউজের গোল্ডেন চিমনি বারে এক দালালদের কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর সেখানে মিতা খানমকে প্রতিনিয়ত জোরপূর্বক যৌন পেশায় বাধ্য করা হচ্ছে মর্মে সম্প্রতি মুঠোফোনের ক্ষুদে বার্তায় তার বাবাকে অবহিত করেন। এ ঘটনায় মো.শাকিল হোসেন, রাজিবুল ইসলাম রাজিব ও রাকিবুল ইসলাম রাতুলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে খুলনার হরিণটানা থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন ভূক্তভোগী মিতা খানমের পিতা খাজা মিয়া শেখ।
এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরিণটানা থানার এস.আই রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন,‘ বুধবার দিবাগত রাতে হরিণটানা থানায় দায়েরকৃত একটি মানব পাচার মামলার প্রধান আসামী মো.শাকিল হোসেনকে পুলিশ ফোর্স নিয়ে নড়াইলের কালিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় ফোন কল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে আটক করা হয়েছে। জেল হাজতে প্রেরণের জন্য পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’