Homeসর্বশেষ সংবাদআসন ফিরে পেতে মাঠে আওয়ামী লীগ, ধরে রাখতে চায় জাতীয় পার্টিও

আসন ফিরে পেতে মাঠে আওয়ামী লীগ, ধরে রাখতে চায় জাতীয় পার্টিও

২০১৭ সালের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আফরুজা বারীকে পরাজিত করে জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে জয়ী হন। এরপর ২০১৮ সালে মহাজোটের শরিক হিসাবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও এমপি নির্বাচিত হন শামীম হায়দার।

আসনটিতে এবার প্রার্থী দেয়ায় আওয়ামী লীগের আফরুজা বারীকে লড়তে হবে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সঙ্গে। আর এ দুই প্রার্থীর মধ্যেই মূল লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

আসনটি ফিরে পেতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছেন। মহাজোটের কারণে আগের বার আসনটি ছেড়ে দেয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও এবার নিজ দলের প্রার্থী পাওয়ায় খুশি তারা।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এবার নেমেছেন ভোট যুদ্ধে। লক্ষ্য একটাই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে পরাজিত করে নিজেদের দলের প্রার্থীকে জয়ী করা। জামায়াত অধ্যুষিত এ আসনটি ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ উদ্ধার করায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে আবারও জয়ী করতে নেমেছেন মাঠে, করছেন নিয়মিত সাংগঠনিক মিটিং।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার প্রার্থী আফরুজা বারী জানান, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে ধারাবাহিকভাবে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে সুন্দরগঞ্জের মানুষ। এ আসনে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও চান এবারের নির্বাচনে আমাকে জয়ী করে উন্নয়নের সে যাত্রায় অংশ নেবেন তারা।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার লেবু জানান, দীর্ঘদিন নিজ দলীয় সংসদ সদস্য না থাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে ধরে রাখা যাচ্ছিল না। সেই সঙ্গে দৃশ্যমান উন্নয়ন না হওয়ায় জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল। নিজ দলের প্রার্থী পাওয়ায় এবার খুশি তারা। নৌকাকে জয়ী করতে শুরু করেছেন সাংগঠনিক তৎপরতা। প্রচার-প্রচারণা শুরু হলে কোমর বেঁধে নির্বাচনী মাঠে নামবেন তারা।

এদিকে, বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় পাটির প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী সময় সংবাদকে জানান, দীর্ঘদিন এ আসনটি জাতীয় পার্টির ছিল। এ আসনের মানুষ লাঙ্গলে ভোট দিতে পছন্দ করে। মহাজোটের সব নেতাকর্মীকে নিয়ে নির্বাচিত হবার পর থেকে কাজ করছেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হবার আশা করেন তিনি। জাতীয় পার্টি এখন এ আসনটিতে আগের চেয়েও অনেক সুসংগঠিত। এবার নৌকার প্রার্থী থাকলেও আবারও তিনি জয়ী হবেন বলে বিশ্বাস তার।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা গ্রামের মজিবুল হোসেন বলেন, ‘জামায়াতের এলাকা হিসাবে পরিচিত সুন্দরগঞ্জে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছে বর্তমান নৌকার প্রার্থী আফরুজা বারীর ভাই প্রয়াত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। তাই সবাই তার সঙ্গে কাজ করছে। তিনি দীর্ঘদিন থেকে এলাকার বিভিন্ন কাজকর্ম করছেন। আর বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় পাটির প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী দীর্ঘদিন থেকে এমপি থাকায় তিনিও মাঠে শক্ত অবস্থানে আছেন। এ দুই জনের মধ্যেই মূল লড়াই হবে।’

এ দুই প্রার্থী ছাড়াও এ আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আরও ৯ প্রার্থী।

এরা হলেন: স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির আইরিন আক্তার, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের খন্দকার রবিউল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনএনপি) মর্জিনা খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, জাসদের মো. গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. ফখরুল হাসান, বিএনএফের মো. ওমর ফারুক সিজার এবং জাকের পার্টির মো. মোশারফ হোসেন।

সংসদীয় আসন-২৯ গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯১ হাজার ৫৩১। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৩ হাজার ১৬৬ জন, মহিলা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৬৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১ জন।

২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে আততায়ীর গুলিতে এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম নিহত হলে ২০১৭ সালে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফা নির্বাচিত হন। পরে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হলে আবারও উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা ও উপজেলা জাপা সভাপতি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে মহাজোটের শরিক হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন জাপার শামীম পাটোয়ারী।

সর্বশেষ খবর