Homeআন্তর্জাতিকমধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে

মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন দীর্ঘ হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে অন্যান্য দেশও এই যুদ্ধে জড়িয়েছে। আর সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা বিশ্ব মোড়লদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী। প্রায় তিনমাস ধরে চলছে ইসরাইলি গণহত্যা। চলমান এ যুদ্ধঘিরে শুরু হয়েছে নতুন শঙ্কা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরাইলি বাহিনীর পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে শুরু থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এতে নতুন মাত্রা যোগ হয় লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের মতো ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর জড়িয়ে পড়ায়। সবশেষ ইসরাইলের বিমান হামলায় সিরিয়ায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় এক সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইল নির্বিচার হামলা অব্যাহত রাখলে দেশটির লেবানন সীমান্তে সংঘাতে জড়ায় হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা। শুরুর দিকে পাল্টাপাল্টি হামলা সীমান্ত এলাকায় সীমিত ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন লেবাননের আরও ভেতরে হিজবুল্লাহর অবস্থানে হামলা বাড়িয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরাইলের লোহিত সাগর-তীরবর্তী বন্দরনগরী ইলাত লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়ে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। একইসঙ্গে লোহিত সাগর দিয়ে চলাচল করা ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট জাহাজেও হামলা চালিয়ে আসছে তারা। বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের নৌবাহিনী ও যুদ্ধজাহাজগুলোকে লোহিত সাগরে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা ক্রমবর্ধমান হামলার ঝুঁকিতে আছেন। হামলার আতঙ্কে ইতোমধ্যে কিছু জাহাজ পথ পাল্টে স্বল্প খরচের সুয়েজ খাল ব্যবহারের পরিবর্তে আফ্রিকা ঘুরে চলাচল করছে। এতে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ভূরাজনৈতিক এই অস্থিতিশীলতা এখন ভারত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। গত শনিবার ভারত মহাসাগরে একটি রাসায়নিকবাহী জাহাজে ড্রোন হামলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন বলেছে, ইরানি ড্রোন জাহাজটিতে আঘাত হানে। যদিও এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইরান।

জ্বালানি ও পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য লোহিত সাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সমুদ্রপথটি আগে ইয়েমেন ও সৌদি আরব আর পশ্চিমে ইরিত্রিয়া, সুদান ও মিসর ঘেঁষে এগিয়েছে। এই পথটি সিনাই উপদ্বীপের সুয়েজ খালের মাধ্যমে এশিয়া ও ইউরোপের দূরত্ব কমিয়েছে। এ পথে চলাচল বিঘ্নিত হলে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পুরো অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে ভেঙে পড়বে আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থা। এতে পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সর্বশেষ খবর