Homeসর্বশেষ সংবাদআগুন দেয়ার আগে এলাকার কুকুরগুলোকে খাওয়ানো হয় ঘুমের ওষুধ

আগুন দেয়ার আগে এলাকার কুকুরগুলোকে খাওয়ানো হয় ঘুমের ওষুধ

যশোরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী টগরকে হত্যার সময় বাধা না দেয়ায় এবং খুনির সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করার অভিযোগে ৬টি ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার আগে এলাকার কুকুরগুলোকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটানো হয়। আগুনে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও নগদ দেড় লাখ টাকাসহ ঘরগুলোর আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে আহত হন যশোর শহরের বারান্দিপাড়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী টগর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। শনিবার রাতে তার মরদেহ এলাকায় আনা হয়। এ ঘটনায় একই এলাকার মেঠোপাড়ার আয়ান নামে এক যুবক জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। আয়ানের বাড়ির পাশেই এই ঘটনা ঘটে। সে সময় আশপাশের লোকজন টের পেলেও কেউ ঘর থেকে বের হননি। আর সেটাই কাল হয়েছে তাদের জন্য।

সহযোগিতায় বের না হওয়ায় ও ‘ঘাতক’ আয়ানের সঙ্গে পাশাপাশি বাড়িতে থাকায় এলাকাবাসীকে শায়েস্তা করতে শনিবার গভীর রাতে ওই এলাকার ৬টি ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুন দেয়ার আগে এলাকার কুকুরগুলোকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মাতাল করা হয়। ওই ঘরের বাসিন্দারা জীবন নিয়ে বের হতে পারলেও রক্ষা করতে পারেননি নগদ টাকা, চাল-ডাল ও নিত্য প্রয়োজনীয় মূল্যবান আসবাবপত্র। সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যরা।

ক্ষতিগ্রস্ত বাবু জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি রাত দেড়টার দিকে আয়ান ও তার সহযোগীরা টগরকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় আমরা ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। এরপর আয়ান ও তার পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু টগরের বন্ধুরা অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকে। তারা বলেন, টগরকে বাঁচাতে যারা এগিয়ে আসেনি তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। শনিবার রাতে মরদেহ আসার পর ঠিক রাত দেড়টার দিকে আগুন দেয় টগরের বন্ধুরা। ঘর থেকে কোনো মতে জীবন নিয়ে বের হয়েছেন তারা। টিভি, ফ্রিজ, নগদ টাকা ও চাল-ডাল সব পুড়ে গেছে।

মোস্তফা নামে অপর এক ক্ষতিগ্রস্ত বলেন, ‘আমি ক্যান্সারের রোগী। ঘরে আমার চিকিৎসার এক লাখ টাকা ছিল। দুইদিন আগে ঋণ করেছি। আগুনে সেই টাকাসহ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পাশের ঘরের লোক ফল ব্যবসা করে। তার নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ সব পুড়ে গেছে। আমাদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’

ঘর মালিক ওমর ফারুক তারেক বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ছুটে আসি। এরপর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। এ সময় সন্দেহভাজন দুই যুবককে আটক করি। পরে পুলিশ এলে তাদের কাছে সোপর্দ করি। আগুনে আমার ভাড়া দেয়া ৬টি ঘর পুড়ে গেছে। সময়মতো ফায়ার সার্ভিস না এলে পাশের আরও অনেকের ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়তো। এ ঘটনায় জড়িতদের আটক ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া তথ্য মতে, অগ্নিকাণ্ডে তাদের নগদ দেড় লাখ টাকাসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এদিকে জড়িত সন্দেহে আটক দুই যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোছাইন বলেন, ‘এটা নাশকতা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর

Exit mobile version