অপাবিপ্রবির ছাত্রীদের জন্য মাত্র একটা হলে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের বাইরের মেস ও বাসায় ভাড়া থাকতে হয়। এতে করে মেস মালিকদের খপ্পরে পড়তে বাধ্য হচ্ছে পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা, এমনকি আধিপত্যের শিকার হতে হচ্ছে নারী শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই সব্বেজ টাওয়ার মালিকের অসদাচরণের মাত্রাটা একটু বেশিই লক্ষ্য করা গেছে। জানা গেছে বিভন্ন সময় একাধিকবার প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়েও এর সুষ্ঠু সমাধান পান নি পাবিপ্রবির নারী শিক্ষার্থীরা। মেস মালিকের রুঢ় আচরণের শিকার হয়ে মেস ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন একাধীক শিক্ষার্থী। অনেক কটুকথার ও সম্মুখীন হয়েছেন তারা।
দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধির অযুহাতে কয়েকবছর ধরে দফায় দফায় ভাড়াবৃদ্ধি, অতিরিক্ত খরচ বৃদ্ধি এবং ট্যাপের পানি খেতে বাধ্য করার মত গুরুতর অভিযোগ করেছেন মেস ছেড়ে আসা একাধীক শিক্ষার্থীরা।তাদের মতে মেস মালিকের ভয়ে ওই মেসে বর্তমানে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।তাদের অভিযোগের ভেতরে আরও রয়েছে কোন কিছু নষ্ট হলে ঠিক করে দেয় না, নিজেদের টাকা দিয়েই ঠিক করতে হয়। বাড়িয়ালার ব্যবহার জঘন্য রকমের খারাপ। মেয়েদের বাবা-মা নিয়ে গালাগালি করে বাজে কথা বলে। ল্যাপটপ ব্যবহার করলেও আলাদা করে ভাড়া দাবী করেন। বেসিন থেকেই পানি নিয়ে খেতে হয় ট্যাংক ও অপরিষ্কার থাকে।ছয় তলা বাসায় শুধু একটি চুলা রয়েছে। সরকারি ছুটি দেওয়া মাত্রই মেয়েরা বাসায় চলে যাওয়ার আগেই চুলা মালিকের বাসায় নিয়ে যায়। আবার ছুটি শেষে আসলেও চুলা দিতে ৫-১০ দিন সময় কাটিয়ে দেয়। বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার অযুহাতে যখন খুশি বিদ্যুতের কাট আউট খুলে রাখে। ভাড়ার টাকার বাইরেও চেয়ার টেবিলের দাম হিসেবে অতিরিক্ত ১৫০০টাকা নেন। মেস মালিক এবং উনার ছেলেরা যখন খুশি উপরে চলে আসে আসার আগে মেয়েদের জানানোর প্রয়োজন মনে করে না। ফ্রিজে খাবার রাখলে আলাদা করে ৫০টাকা বিল দিতে হয় । রুমের জানালায় ও সিড়ি ঘরে কোনো গ্রিল নেই এতে করে মেয়েদের সেইফটির অনেক সমস্যা দেখা যায়।
আরও পড়ুন:ইনোভেটিভ ও পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড মনোননীত রোভার জাহেদ মিয়া
এতসব সমস্যায় জর্জরিত হয়ে সব্বেজ টাওয়ার মেস মালিকের দৌরাত্ম্যের ভুক্তভোগী হয়েছেন একাধীক নারী শিক্ষার্থী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, মেসটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিকটে হওয়ার কারনে এখানে উঠেছিলাম,প্রথমে বুঝে উঠতে পারিনি পরে যতদিন যেতে থাকে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয় সেই সাথে অযৌক্তিক অতিরিক্ত টাকা দাবী করা হয়। কেউ কিছু বলতে গেলেই মেস মালিক তাদের মেস ছেড়ে চলে যেতে বলেন। বিশেষকরে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির সময় হলেই পুরাতন বর্ডারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয় এবং মেস ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এতে করে নতুন শিক্ষার্থীরা না জেনেই আবার এই।মেসে উঠে পড়েন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সব্বেজ টাওয়ারের কর্ণধার এসকল অভিযোগের দায় অস্বীকার করে তিনি জানান মেসের নিয়ম মেনেই সবকিছু পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, “বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের কিছু অনিয়ম চোখে পড়লে হয়ত সেই অনিয়ম গুলো ধরিয়ে দেই কিন্তু খারাপ ব্যবহার করিনা, বিনা কারনে দিনের বেলা লাইট জালিয়ে রাখলে, অযথা ফ্যান চালাইলে বন্ধ করতে বলি তাছাড়া এমন কিছু করিনা যাতে করে তাদের সাথে খারাপ হয়। তারপরেও মানুষ হিসেবে আমার কিছু ভুল থাকতে পারে। তাছাড়া বাকী যেসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সেগুলো মুলত ভুলবোঝাবুঝি কেননা শিক্ষার্থীরা যে ট্যাপের পানি খায়, আমিসহ আমার পরিবার ও সেই পানি ই খায়। তবে ট্যাপের পানি কেউ খেতে না চাইলে আলাদা মোটরের পানির লাইন ও আছে সেখান থেকেও পানি নিতে পারেন ছাত্রীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো: কামরুজ্জামান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশেসহ পাবনার প্রত্যেকটি মেসের তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছি, কোথাও কোন সমস্যা হলে আমি নিজে গিয়ে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সব্বেজ টাওয়ারের এই বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই মেস মালিকের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করব। তবে নতুন হলটি চালু হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের মেস সংক্রান্ত সমস্যা সহজেই সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করছি। ছাত্রছাত্রীদের যেকোন সমস্যায় আমরা সার্বক্ষণিক তৎপর ভুমিকা পালন করে যাব।