পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সিএসই (২০২১) ব্যাচের ছাত্র মোহতাসিম মাসুদ। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার দুপুর ১২টায় বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: যেকোনো মূল্যে এই হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বিবাদীপক্ষকে বহন করা, নিহত মাসুদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে বিবাদীপক্ষকে বাধ্য করা, তদন্ত কার্যক্রমে বাধাপ্রদানের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, আহতদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাপারে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর কারো প্রাণ যেন না যায় এবং সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে আমরা অমিতের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি তা হলো, পুলিশের সংকেত পেয়ে তারা বাইক থামিয়ে পুলিশের সাথে কথা বলছিল। আমরা সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি যে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
আমরা এই ঘটনায় গভীরভাবে শোক জ্ঞাপন করি, নিহতের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু ও অতিসত্বর বিচার চাই। যেকোনো মূল্যে ক্ষমতার বিপরীতে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা হোক, যেকোনো মূল্যে আমাদের দাবি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এই আকস্মিক হত্যাকাণ্ডের শোকে আমরা যখন হতবিহ্বল, ঠিক তখনই আমরা জানতে পারি যে, অভিযুক্ত গাড়িচালকের পিতা একজন প্রভাবশালী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। তার কারণে আমাদের এক ভাইয়ের যখন প্রাণ দিতে হলো, আমাদের আরো দুই ভাই যখন মারাত্মকভাবে আহত, হাসপাতালের বিছানায় মারাত্মক যন্ত্রণায় কাতর, ঠিক তখন গাড়িচালকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়রা মামলার মোড় ঘোরানোর, এমনকি মামলা যাতে না নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত।
তারা বলেন, অতীতেও আমরা দেখেছি যে অপরাধী যদি প্রভাবশালী হয়, তাহলে বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে, ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, হুমকি-ধামকি দিয়ে, ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা না করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে, প্রাথমিকভাবে মামলা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব খাটায়, কিংবা আরো নানাভাবে ছাড় পেয়ে যায়। এটা আমরা কখনোই হতে দিতে পারি না।