Homeজেলাসিলেটে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন

সিলেটে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় একই স্থানে দুটি পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় প্রশাসন ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি বাতিল করেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন।

সোমবার জকিগঞ্জ টাউন ঈদগাহ মাঠে মুসলিম যুব সমাজ জকিগঞ্জের উদ্যোগে “ইসমতে আম্বিয়া আদালতে সাহাবা ও খতমে নবুওয়ত মাহফিল” আয়োজনের কথা ছিল। তবে একই স্থানে “দেশপ্রেমিক তৌহিদি জনতা”র ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত-আহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

রোববার জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান এক চিঠিতে ওয়াজ মাহফিল বাতিলের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, “থানার প্রতিবেদনে মাহফিলের কারণে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এই ভিত্তিতেই অনুমতি দেওয়া হয়নি।”

আয়োজকদের অভিযোগ

মুসলিম যুব সমাজ জকিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রশিদ আহমদ অভিযোগ করেন, তারা প্রতিবারের মতো এবারও মাহফিলের আয়োজন করেন। অনুমতির জন্য ইউএনও ও থানার ওসির সঙ্গে কথা বলার পর মৌখিক অনুমতি পেয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন। তবে পরে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা মাহফিল প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়।

মাহফিলটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার শুরু হলে থানা থেকে তাদের ডেকে সতর্ক করা হয়। আয়োজকরা জানান, জামায়াত-শিবির মাহফিল বন্ধ করতে একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, “ইসমতে আম্বিয়া” অর্থাৎ নবীগণ নিষ্পাপ এই বিষয়টি জামায়াত মানতে নারাজ।

জামায়াতের বক্তব্য

জামায়াতে ইসলামীর জকিগঞ্জ উপজেলা আমির মো. জালাল উদ্দিন বলেন, “দেশপ্রেমিক তৌহিদি জনতার ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।”

প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা

জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম বলেন, অনুমতি না থাকায় কাউকেই কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টাউন ঈদগাহের আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, তবে পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”

প্রতি বছর জকিগঞ্জে এই ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও এবার দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রশাসনের সময়োচিত সিদ্ধান্তে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তবে ধর্মীয় ইস্যুতে উত্তেজনা এড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর