ভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জন দেওয়া শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করেছে সমগ্র বাংলাদেশ। মধ্যরাতের নীরবতা ভেঙে শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে হাজারো মানুষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশাসন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে প্রভাতফেরি, আলোচনা সভা ও বিশেষ দোয়া। দেশজুড়ে এদিন বাঙালির ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার এক অনন্য আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোঃ নসরুল্লাহর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদ, ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এক মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
নাগেশ্বরীতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়। গভীর রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। নাগেশ্বরী সরকারি কলেজ, পল্লী বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
পাবিপ্রবিতে সকালে প্রভাতফেরি বের করা হয়, যা শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামীম আহসান ও রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আলোচনা সভায় অধ্যাপক শামীম আহসান বলেন, “আমরা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি, কিন্তু মাতৃভাষার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারিনি।”
ইউআইটিএসের শ্রদ্ধা নিবেদন
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়।
মাগুরায় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল
মাগুরায় সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রাঙ্গণে রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিএনপি, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।