কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আয়োজনে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দের নিয়ে ‘৫২ থেকে ২৪ : ইতিহাসের’ পরিক্রমা শীর্ষক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বইমেলার তৃতীয় দিন বিকেল পাঁচটার দিকে মেলার প্রাণকেন্দ্র বাংলা মঞ্চে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ইনসানুল ইমামের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইবি শাখার সেক্রেটারি আবু ইউসুব, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইবি শাখার সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন রাহাত, খেলাফত ছাত্র মজলিসের ইবি প্রতিনিধি সাদেক আহম্মেদ।
এসময় খেলাফত ছাত্র মজলিসের ইবি প্রতিনিধি সাদেক আহম্মেদ বলেন, বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে যে-সকল আন্দোলন হয়েছে তার নেতৃত্ব দিয়েছে দেশের ছাত্র জনতা। বায়ান্ন, একাত্তরসহ সর্বশেষ চব্বিশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে দেশের ছাত্রজনতা। এই সবগুলো আন্দোলনে তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করা। এই যে বারবার আমাদেরকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হয় এর প্রধান কারণ আমাদের মধ্যে ঐক্য না থাকা।আমরা যদি আমাদের রাজনৈতিক পরিচয়কে পেছনে ফেলে আমরা বাংলাদেশি এই পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে আমাদের বারবার রক্ত দিতে হবে না।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, আমরা দেখতে পাই ১৮৩৭ সালের বালাকোট যুদ্ধ, ১৮৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ, ১৯৪৭ এর ব্রিটিশ তাড়ানো, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৭৫ এর তিনটি বিপ্লব, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান সব একই সূত্রে গাঁথা। এই সবগুলো আন্দোলনেই সকল অন্যায়কে একত্রিত করে জনতা তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।আজ আমরা বিচ্ছিন্ন এই কারণে যে আমরা স্বাধীন। আমার বিশ্বাস যদি আবারও প্রয়োজন হয় আমরা আবার একসাথে ঐক্যবদ্ধ হবো সবাই।
ছাত্রশিবির ইবি শাখার সেক্রেটারি আবু ইউসুব বলেন, এই দেশের মানুষ বিপ্লব পরবর্তী এমন একটি সমাজ দেখতে চায় যে সমাজে কোনো জুলুম থাকবে না, কোনো নির্যাতন থাকবে না, কোনো চাঁদাবাজ থাকবে না, কোনো টেম্পুস্ট্যান্ড থাকবে না। সামনে তৈরি হবে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ।
অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের বিপ্লবী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর ছয় মাস অতিবাহিত হলেও ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরদের কোনো বিচার হচ্ছে না। আমরা হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি ফ্যাসিস্টকে নির্মূল না করা হয় তাহলে ছাত্রসমাজ কিন্তু আর বসে থাকবে না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বায়ান্নোর সাথে চব্বিশ একই সূত্রে গাঁথা। তখন যেমন সদ্য স্বাধীন একটি দেশের মানুষের উপর জোর করে একটি অন্যায্য সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল, চব্বিশেও তাই করা হয়েছিল। তখন পাকিস্তানের সাথে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল আমেরিকা। আর চব্বিশে একই কায়দায় শেখ হাসিনাকে তার সকল অন্যায়ে প্রত্যক্ষভাবে মদদ দেয় ভারত। এত এত আন্দোলন করার পরও আমরা একটি চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছতে পারিনি। কারণ আমরা এখনও নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে ভাবতে পারি নাই।
এসময় আলোচকরা বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।