ব্রাজিলকে এক হালি গোলের লজ্জায় ডোবানোর পরও এই জয় আর্জেন্টিনার সেরা নয় বলে মন্তব্য করেছেন লিওনেল স্ক্যালোনি। আলোবিসেলেস্তদের আরও ভালো করার সামর্থ্য আছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্বকাপজয়ী কোচ। অন্যদিকে হারের সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে ব্রাজিল ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইলেন কোচ দরিভাল জুনিয়র।
সুপার ক্লাসিকো শুধু নামেই সুপার ক্লাসিকো। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ম্যাচে নেই ঠিক আগের উত্তাপ। বুয়েনস এইরেসের স্তাদিও মনুমেন্তালে যা হলো এরপর থেকে ফুটবল বিশ্বের এই লড়াইটাকে আর ধ্রুপদি বলার সুযোগ নেই। অন্তত যতদিন আবারো স্বরূপে না ফেরে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
১৪’র সেভেন আপ ২৫-এ এসে এক হালি। প্রতিপক্ষকে বাকযুদ্ধে হারাতে এসব হয়তো কেবলই সমর্থকদের কথার কথা। অনেকে আবার টিপ্পনি কেটে বলবেন উন্নতিই তো হয়েছে। কিন্তু ভালো করে লক্ষ্য করুন, বেলো হরিজন্তেয় কক্ষচ্যুত হওয়া সেলেসাও এখনো ফিরতে পারেনি পূর্বসূরীদের পথে। আর তাই এমন একটা জয়েও খুব স্বস্তি খুঁজছে না আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি বলেন, ‘এটা দলগত জয়। আমরা একটা দল হয়ে খেলেছি। এ জন্যই ব্রাজিলকে এভাবে হারাতে পেরেছি, এবং এটাই একমাত্র পথ। তবে আমি বলব না এটা আমাদের সেরা জয়। আমি মনে করি এর চাইতেও আমরা ভালো খেলি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রতিটা ম্যাচে আমরা কি করতে চাই সেটা বোঝা এবং তার সঠিক বাস্তবায়ন।’
৯৮৩ মিলিয়ন ইউরো মার্কেট ভেল্যুর ব্রাজিলের কাছে খুব একটা পাত্তা পাওয়ার কথা না ৭০২ মিলিয়নের আর্জেন্টিনার। ভিনি-রদ্রিগো-রাফিনিয়ারা ইউরোপের বাজারে হট কেক। সেই তুলনায় আলভারেজ, এনজো, ম্যাক অলিস্টাররা গড়পড়তা। তবে ক্লাবের সমীকরণ পুরো বদলে যায় জাতীয় দলের জার্সি গায়ে।
ব্রাজিলের কোচ দরিভাল জুনিয়র নিজের কাঁধে দায় নিয়ে বলেন, ‘সমস্ত দায় আমার। আমাদের যে সব পরিকল্পনা ছিল, দুর্ভাগ্যবসত ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আর্জেন্টিনা দল দুর্দান্ত, প্রত্যেক বিভাগে তারা আমাদের চেয়ে সেরা পারফর্ম করেছে। ব্রাজিল ভক্তদের কাছে আমি ক্ষমা চাই, তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি বলে।’
একপেশে লড়াইয়ে মন ভরেনি লিওনেল স্ক্যালোনির। সুপার ক্লাসিকো, হাইভোল্টেজ কিংবা মহারণের তকমা পাওয়া ম্যাচগুলো এমন সাদামাটা হলে মন ভারারও কথা নয়। তবে এটা ঠিক যে ফুটবল সংস্কৃতি ধারণ করে ব্রাজিল, তাতে তারা যে খুব দ্রুতই স্বরূপে ধরা দেবে সে প্রত্যাশা রাখাই যায়।
স্ক্যালোনি বলেন, ‘ব্রাজিল সব সময়ই দুর্দান্ত একটা দল। তারা এখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমি বিশ্বাস করি তারা দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াবে। আর্জেন্টিনার যেমন একটা ইতিহাস আছে ঠিক তেমনি ব্রাজিলেরও। তাদের পাঁচটা বিশ্বকাপ আছে। ব্রাজিল ফুটবল কতটা সমৃদ্ধ এটা তারই প্রমাণ।’
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে সবার আগে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দেরিতে হলেও ইউএসএ, কানাডা, মেক্সিকোর বিমান ধরবে ব্রাজিল এটা বাজি ধরে বলা যায়। কে জানে শতবর্ষী বিশ্বকাপেই হয়তো সেরাটা জমিয়ে রেখেছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা!