Homeজেলানাগেশ্বরীতে ভূমি কর আদায়ে ব্যতিক্রমী হালখাতা আয়োজন, সাড়া ফেলেছে জনসাধারণের মাঝে

নাগেশ্বরীতে ভূমি কর আদায়ে ব্যতিক্রমী হালখাতা আয়োজন, সাড়া ফেলেছে জনসাধারণের মাঝে

ভূমি কর আদায়ে নাগেশ্বরী উপজেলায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে হালখাতা অনুষ্ঠান। আজ ১৫ এপ্রিল, ১লা বৈশাখ, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের উদ্বোধন করেন নাগেশ্বরী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই হালখাতা কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদিনব্যাপী কর গ্রহণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

হালখাতার উৎপত্তি মূলত বাংলার প্রাচীন ব্যবসায়িক রীতিনীতি থেকে। “হালখাতা” শব্দটি দুইটি অংশে বিভক্ত—”হাল” অর্থ নতুন বা বর্তমান এবং “খাতা” অর্থ হিসাবের খাতা। হালখাতা মূলত একটি নতুন হিসাব খাতা যা বাংলা নববর্ষের শুরুতে ব্যবসায়ীরা পুরাতন বছরের দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করে নতুন করে খোলা হিশাব খাতার সূচনা করতে ব্যবহার করতেন।

এই প্রথার উৎপত্তি মুঘল আমলে, বিশেষ করে নবাবদের আমলে বণিকেরা কর আদায়, হিসাব-নিকাশ সহজ করতে এ রীতি চালু করেন। ব্যবসায়ীরা বাংলা নববর্ষে নিজেদের ক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে পুরোনো হিসাব মিটিয়ে নতুন খাতা খোলেন। এর সঙ্গে মিষ্টিমুখ, আপ্যায়ন এবং অনেক সময় ধর্মীয় রীতিও যুক্ত থাকত, যেমন হিন্দু ব্যবসায়ীরা লক্ষ্মী গণেশের পূজা করতেন।

এই উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং ঝামেলাবিহীনভাবে ভূমি কর পরিশোধ করেন। কর প্রদান শেষে নাগেশ্বরী পৌরসভার বাসিন্দা আদম আলী সরকার বলেন, “এতো সুন্দর ও সহজভাবে আমি এর আগে কখনোই কর প্রদান করতে পারিনি। আমি চাই এই পদ্ধতি সারা বছর চালু থাকুক।”

প্রেসক্লাব নাগেশ্বরীর সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “নাগেশ্বরীতে এমন উদ্যোগ এর আগে গ্রহণ করা হয়নি। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে নাগেশ্বরী উপজেলা কর আদায়ে দেশের মধ্যে রোল মডেল হয়ে উঠতে পারে।”

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান জানান, “জনগণকে সহজভাবে সেবা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। ভূমি কর আদায়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও সচেতনতা বাড়াতে এই হালখাতার আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।”

জনসেবামূলক এই ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নাগেশ্বরীর ভূমি ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

সর্বশেষ খবর