ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পদক্ষেপের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা পর্যালোচনা করার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সভাপতিত্বে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) সভা শুরু হয়েছে।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি উপযুক্ত জবাব (ভারতকে) দেবে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এনএসসি’র বৈঠকে শীর্ষ বেসামরিক ও সামরিক নেতৃত্ব অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং ভারতের তাড়াহুড়ো করে ঘোষিত পদক্ষেপ পর্যালোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে ‘অনুপযুক্ত’ এবং ‘গুরুত্বহীন’ বলে দুঃখ প্রকাশ করে ইসহাক দার বলেন, সাম্প্রতিক ‘সন্ত্রাসী ঘটনার’ (কাশ্মীরে) সঙ্গে পাকিস্তানের সংযোগের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি নয়াদিল্লি।
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসী ঘটনায়’ এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করা ‘অযৌক্তিক’। ভারত তার অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
এর আগে, ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে পাঁচ বড় পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয় মোদি সরকার।
যেসব পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়েছে
সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার মধ্যে এটাই সবথেকে বড়। পাকিস্তানের ঝিলম, চেনাব, রবি, বিয়াস এবং সাতলুজ নদীগুলো সিন্ধু নদের পানির ওপর নির্ভরশীল বলে জানা যায়। এই নদীগুলো থেকেই পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানি পৌঁছায়। তাই সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
আটারি-ওয়াঘা চেকপোস্ট বন্ধ: অনির্দিষ্টকালের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। সম্প্রতি যারা এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের ফেরার জন্য ১ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছে মোদি সরকার।
ভিসা বাতিল: পাকিস্তানিদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে সমস্ত ‘সার্ক’ ভিসা।
পাক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ: নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের কর্মকর্তাদেরও এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের নিজ দেশে ফেরার নির্দেশও দিয়েছে নয়াদিল্লি। এ-ও স্পষ্ট করা হয়েছে, পাক নাগরিকদের আপাতত আর ভিসা দেয়া হবে না।
হাইকমিশনে কর্মকর্তার সংখ্যা কমানো: ভারতীয় দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে। ১ মে ২০২৫ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। ইসলামাবাদে উপস্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা এবং বিমান উপদেষ্টাকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত।