ইউরোপে নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসনের নতুন পথ খুলে দিতে বাংলাদেশ সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে “মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি” বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারকে সই হয়।
এই স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ড. আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে স্বাক্ষর করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি। চুক্তিটি ইউরোপে বৈধ অভিবাসনের পথ সুগম করতে বাংলাদেশের একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উপদেষ্টা জানান, এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো অবৈধ অভিবাসন রোধ করে নিরাপদ ও নিয়মিত পথে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। ইতালি এবার সৃজনাল ও নন সৃজনাল উভয় খাতে কর্মী নেবে। এছাড়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে, যারা প্রতি বছর একবার বৈঠক করবে।
সরকারের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ইতালিয়ান ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে, যাতে কর্মীরা বিদেশে গিয়ে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন।
ড. আসিফ নজরুল আরও জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য ইতালির যে অভিবাসন কোটা রয়েছে, তা বাড়ানোর বিষয়ে ইতালি সরকার চিন্তাভাবনা করছে। তবে চুক্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ না থাকলেও, ইতালিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ আগের তুলনায় ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, অ্যাম্বাসিতে ফাইল প্রক্রিয়াকরণ দ্রুততর করা এবং অভিবাসনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে।
অনুষ্ঠানে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ও ইতালির সম্পর্ক বহু পুরনো। বৈধ পথে শ্রমিক পাঠানোর জন্য আমরা সবসময় কাজ করে আসছি।”
এদিকে, উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার সাম্প্রতিক সৌদি আরব ও জর্ডান সফর সম্পর্কেও সাংবাদিকদের অবহিত করেন। সৌদি আরবে নারী কর্মীদের বৈধতার সুযোগ এবং জর্ডানে পুরুষ কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনার অগ্রগতির কথা তিনি জানান।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া এই চুক্তিকে একটি “ঐতিহাসিক মাইলফলক” হিসেবে অভিহিত করেন, যা আগামী দিনে ইউরোপমুখী অভিবাসনকে নিরাপদ ও নিয়মতান্ত্রিক পথে পরিচালিত করবে।