কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ মে) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত ছাত্রলীগ নেতা হলেন সাইমুন খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কৃষিশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।
জানা যায়, ঐ ছাত্রলীগ নেতার পড়াশোনা শেষ হওয়া ক্যাম্পাস সনদপত্র তুলতে আসেন। ওই নেতার মেয়ে বান্ধবীর (প্রেমিকা) সাথে প্রধান ফটকে আড্ডা দিতেছিল। এসময় শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ঘোরাঘুরি করা অবস্থায় তাকে আটক করে। পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দিলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে থানায় সোপর্দ করে। যদিও পূর্বের মারধরের ঘটনার জেরে ওই নেতাকে আটক করছে বলে জানা যায়।
এদিকে ঐ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের উপর হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। সর্বশেষ গতবছরের জুলাই আন্দোলনের আগে জুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলামকে আনাস হলের (পূর্বের শেখ রাসেল হল) ছাদে ডেকে নিয়ে ছাদ থেকে ফেলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া-সহ মারধরের অভিযোগে রয়েছে। এ ঘটনায় ওই সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিচার চেয়ে প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিল।
পরে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মারধরের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ‘আমি মারধরের শিকার হয়ে ওই সময় প্রক্টর বরাবর বিচার চেয়ে অভিযোগ দিয়েছিলাম। ছাত্রলীগের কর্মী হওয়ায় আমি বিচার পায়নি। সে যে হুমকি দিয়েছে সব ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে।’
এদিকে সাথে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বান্ধবী জানান, ‘এখানে কোনো কিছুই হয়নি। হুট করে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে ঘিরে ধরে, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের ডেকে থানায় সোপর্দ করে। ও তো কারো ক্ষতি করেননি। ছাত্রলীগের নেতা বলে মামলা দিচ্ছে। এর আগের মারধরের ঘটনা প্রক্টরের অফিসে উভয় পক্ষের সম্মতিতে সমাধান হয়েছিল।’
পূর্বের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সে ক্যাম্পাসে আসছে সেটা জানি না। আমাদের অবগত করেননি। আগের বিষয়ে বিভাগ অবগত না।’
ইবি থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘মারধরের অভিযোগ দিয়েছে, ডকুমেন্টস দেখে আমলে নিতে পারে। তবে ছাত্রলীগ নেতা যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বে করা মামলায় চালান দেয়া যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘যেহেতু ছাত্রলীগের পোস্টধারী নেতা। সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দিতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় তো আগেই অবগত রেখেছে যে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা যদি বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে তাহলে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’