রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাংবাদিক সমিতির (সোকসাস) তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও সাংবাদিক সমিতির কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। কেক কাটা ও নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্যাপন করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১০টায় কলেজের শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ড. মাহমুদুর রহমান।
বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জনাব শহীদুল ইসলাম, দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খায়রুল আলম রফিক, কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন, অফিসার্স কাউন্সিলের সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং আজকের পত্রিকার শিক্ষা বিভাগের প্রধান ও পাঠকবন্ধুর প্রধান সংগঠক আব্দুর রাজ্জাক খান। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইয়াছিন মোল্লা।
এসময় সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয় উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় ও মাহমুদুর রহমান । নতুন এই কার্যালয় কলেজের পুরোনো ভবনের নিচতলায় ১১৫ নং রুমে অবস্থিত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, সংবাদ সংগ্রহই সাংবাদিকতা নয়, বরং সঠিক সংবাদকে সাহসের সঙ্গে উপস্থাপন করাই রিপোর্টিং। সাংবাদিক কারও শত্রু নন। সুন্দর কাজকে তুলে ধরা, সত্য খবর প্রকাশ করাই সাংবাদিকের দায়িত্ব। সাংবাদিক কখনো রাজনীতির দ্বারা দমিত হওয়ার মানুষ নন। সাংবাদিক নিজ আদর্শে অটল থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করবেন। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে এবং গুণী মানুষদের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।’
প্রধান আলোচক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমি তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষা জানতে চাই, বুঝতে চাই। কারণ, আমি যে পেশায় আছি, সেখানে তরুণদের চাওয়া-পাওয়াগুলো না জানলে আমি একজন দায়িত্বশীল সাংবাদিক হতে পারব না।’ নবীন সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রথমেই নিজের বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনায় দক্ষ হতে হবে। তিনি আরো বলেন, জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত না হলে ভালো লেখা উপহার দেওয়া ও সম্ভব নয়। তরুণ সাংবাদিকদের তিনি বেশি বেশি সাহিত্য পড়তেও উৎসাহিত করেন।
বিশেষ আলোচক শহীদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক ও সাংবাদিক—এই দুই পেশার মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। শিক্ষক যেমন ছাত্রকে জ্ঞান দেন, সাংবাদিক তেমনি পাঠককে অজানাকে জানান, সঠিক ও সত্য সংবাদ তুলে ধরেন। তরুণ প্রজন্ম যদি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়, তবে বাংলাদেশে পরিবর্তন সম্ভব।
বিশেষ অতিথি আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাংবাদিক সমিতি বা ক্লাব গঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতা চর্চার সুযোগ তৈরি হয়। এর মাধ্যমে তাঁরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। যাঁরা প্রতিবেদক হিসেবে যুক্ত হতে পারেন না, তাঁরা ফিচার লেখার মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা গড়ে তুলতে পারেন। আপনাদের উচিত বিভিন্ন পত্রিকা ও গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। এটি আপনাদের সাংবাদিকতা চর্চাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে ইয়াছিন মোল্লা দল–মত–নির্বিশেষে সবাইকে বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা জানান এবং অনুষ্ঠান শেষ করেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ‘শিক্ষা, সততা, সৃজনশীলতা’—এই স্লোগানকে ধারণ করে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি (সোকসাস) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সোকসাস কলেজ ক্যাম্পাসে সাফল্যের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।