কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রথমবারের মতো দুই দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রত্নতত্ত্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির যৌথ আয়োজনে দুইদিন ব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। চলবে শনিবার (১৭মে) পর্যন্ত।
শুক্রবার (১৬মে) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হল রুমে আলোচনা সভার মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে সম্মেলনটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। এছাড়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। পাশাপাশি, দেশ বিদেশের খ্যাতনামা প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ আন্তঃবিভাগীয় গবেষক, ঐতিহ্য সংরক্ষণবিদ এবং নবীন গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন।
দুই দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বায়ক সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ড. মুহতাসিম বিল্লাহ।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ওয়ারি বটেশ্বর নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক চারটি প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়। সেজন্য বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এই আয়োজনটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যুগোপযোগী। দুদিন ব্যাপী আয়োজনে অনেক পেপার, আর্টিকেল পড়া হবে, বিভিন্ন গবেষক উপস্থাপন করবেন, সেখান থেকে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হবে। আমি আয়োজকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘বাংলাদেশে অল্প কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালু করা হয়, যা শুরু থেকেই ভালো কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্নতত্ত্বের জ্ঞান অর্জন ও এর চর্চা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, কারণ এর মাধ্যমে আমরা আমাদের অতীত ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পাই এবং জানতে পারি। এই বিষয়ে গবেষণার অনেক সুযোগ রয়েছে। একটি প্রত্নতত্ত্বভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
আন্তর্জাতিক প্রত্নতত্ত্ব সম্মেলনের আহবায়ক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘জ্ঞানচর্চা ছাড়া জ্ঞানের বিকাশ সম্ভব নয়। আর জ্ঞানচর্চার জন্য এ ধরনের সভা, সেমিনারের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল এমন একটা ইফেক্টিভ সেমিনারের আয়োজন করার। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন সুন্দর একটা আয়োজনে সহায়তা করার জন্য।’
তিনি আরো বলেন,’ বাংলাদেশে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে এতবড় পরিসরে এটাই প্রথম আয়োজন। এখানে ১৬টি বিষয়ে বিভিন্ন গবেষকগণ তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই আয়োজনের অংশ হওয়ার জন্য।’