পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষ আমলাকে সরিয়ে নতুন নিয়োগ দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই রদবদলের মাধ্যমে ‘নীতিগত শৃঙ্খলা’ ও ‘পরিকল্পিত কূটনৈতিক কৌশল’ বাস্তবায়নের পথ সুগম করতে চায় প্রশাসন। তবে এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মাঝে শুরু হয়েছে জোরালো আলোচনা।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন একই দায়িত্বে থাকা আমলাদের ঘুরিয়ে ফেলা একটি স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক কিছু আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভারত ও চীন নীতিতে মতপার্থক্যই এই বদলের মূল কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিশেষ করে লালমনিরহাটে চীনের সহায়তায় বিমানঘাঁটি নির্মাণ এবং ভারতের নতুন বাণিজ্য নীতির প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে দ্বিধা দেখা দেয়। কেউ কেউ বলেছেন, কূটনৈতিকভাবে ভারসাম্য রক্ষার নামে অনেক সময় মন্ত্রণালয়ের মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়, যা সরকারের মূল নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তাহমিনা সুলতানা বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মতের স্বাধীনতা থাকলেও, সেটি সরকারের সামগ্রিক কৌশলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে বদল অনিবার্য হয়ে ওঠে।”
অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, বর্তমান সরকার কূটনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকতেই আমলাদের পরিবর্তনের নাটক সাজাচ্ছে। তাঁরা মনে করেন, দেশের স্বার্থ রক্ষায় একটি স্বাধীন ও দক্ষ পররাষ্ট্রনীতি প্রয়োজন, যেখানে মতের স্বাধীনতা সংরক্ষিত থাকবে।
এদিকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত আমলাকে নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রশাসনিক অঙ্গনে জল্পনা চলছে, তিনি সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং ‘মসৃণ’ কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষায় পারদর্শী হিসেবে পরিচিত।