জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি একটি বড় ধরনের বৈশ্বিক বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়। এই বিভ্রাট বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীকে মারাত্মক ভোগান্তিতে ফেলে, যারা প্রতিদিনের বিভিন্ন প্রয়োজনে এই এআই টুলটির ওপর নির্ভরশীল। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই বিভ্রাট দিনভর অব্যাহত থাকে, যার ফলে ব্যবহারকারীরা চ্যাটবটটি অ্যাক্সেস করতে, প্রতিক্রিয়া পেতে বা স্বাভাবিক গতিতে কাজ করতে ব্যর্থ হন।
শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য, পেশাদাররা দাপ্তরিক কাজের জন্য, এবং দৈনন্দিন জীবনে রান্নার রেসিপি থেকে শুরু করে আবেগিক সমর্থন ও ডেটিং পরামর্শের মতো ব্যক্তিগত প্রয়োজনেও চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেন। এই অপ্রত্যাশিত বিভ্রাট তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটায়। অনেকে “এরর মেসেজ” দেখতে পান, আবার কারো কারো জন্য চ্যাটবটটি সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা এই অচলাবস্থা ব্যবহারকারীদের মধ্যে হতাশা ও বিরক্তির সৃষ্টি করে।
বিভ্রাটের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ওপেনএআই, চ্যাটজিপিটি’র নির্মাতা, তাদের নিজস্ব স্ট্যাটাস পেজে এই সমস্যা স্বীকার করে নেয়। তারা জানায় যে, তারা সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে এবং এর সমাধানে কাজ করছে। বিভ্রাটের ব্যাপকতা এতটাই ছিল যে, এটি কেবল চ্যাটজিপিটি’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ওপেনএআই’র অন্যান্য পরিষেবা, যেমন সোরা (Sora) এবং তাদের বিভিন্ন এপিআই (APIs)-ও এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।
যদিও বিভ্রাটের সময় কিছু ব্যবহারকারী ধীরে ধীরে পরিষেবা পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখতে পান, তবে ওপেনএআই নিশ্চিত করে যে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও সময় লাগবে। এই ঘটনা এআই নির্ভর প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতা এবং দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি প্রশ্ন তোলে যে, যখন এত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রযুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ে, তখন তার বিকল্প ব্যবস্থা কতটা জরুরি এবং কীভাবে এই ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীদের প্রস্তুত থাকা উচিত। এই বিভ্রাট আরও একবার প্রমাণ করে যে, উন্নত প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করলেও, এর উপর অত্যধিক নির্ভরতা অপ্রত্যাশিত সমস্যা তৈরি করতে পারে।