Homeখেলা‘স্বপ্ন ছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার, তাই চেষ্টা বন্ধ করিনি’

‘স্বপ্ন ছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার, তাই চেষ্টা বন্ধ করিনি’

বিশ্বকাপ জিতে লিওনেল মেসি কতটা খুশি তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে। বিমানে কিংবা বিছানায়, কোথাও হাতছাড়া করতে রাজি নন সোনালি শিরোপাটা।

সবকিছুতেই ফুটে উঠছে বিশ্বজয়ী ফুটবলারের উচ্ছ্বাস। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক এবার পোস্ট করেছেন এক ভিডিওবার্তা, যেখানে নিজের শৈশব, বিশ্বকাপ স্বপ্ন, ব্রাজিলে স্বপ্নভঙ্গের অনুভূতি, ডিয়েগো ম্যারাডোনা, কোচিং স্টাফসহ নানা বিষয় নিয়ে জানিয়েছেন নিজের মতো।

দেশে ফিরে শিরোপা উৎসবে যোগ দিতে খোলা বাসে করে আর্জেন্টিনা দল জড়ো হয়েছিল বুয়েন্স এইরেস শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত মনুমেন্ট অবেলিস্কে। সেখানে লাখো মানুষের উৎসবে যোগ দেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়রা।

এই উৎসবে যোগ দেওয়ার আগে ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সেই ভিডিওতে উঠে এসেছে তার শৈশবের প্রথম ক্লাব গ্রান্দলির হয়ে খেলার দিনগুলো থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেকের মুহূর্ত, ব্রাজিল বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে বেদনাদায়ক হারের মুহূর্তগুলো। আছে কাতার বিশ্বকাপের সুখস্মৃতি; শিরোপা জয় ও জয়োৎসবের দৃশ্য।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) লুসাইল স্টেডিয়ামে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় আর্জেন্টিনা। ৩৫ বছর মেসি পান ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ। 
বিশ্বকাপ জয়ের পর সে ভিডিও বার্তায় মেসি জানিয়েছেন, শৈশব থেকেই তিনি বিশ্বকাপের শিরোপাটা জিততে চেয়েছেন। বারবার বাধা আসার পর কখনোই তিনি স্বপ্ন দেখা বাদ দেননি।

তিনি লিখেছেন, ‘গ্রান্দলি থেকে কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর কেটে গেছে। প্রায় তিন দশকের এই সময়ে ফুটবল আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে, কিছু দুঃখও দিয়েছে। সবসময়ই আমার স্বপ্ন ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার, আমি চেষ্টা করা বন্ধ করতে চাইনি, এমনকি কখনও এমন কিছু নাও অর্জন করতে পারি- এটা জানার পরও।’

 

১৯৭৮ সালে নিজেদের মাটিতে আয়োজিত বিশ্বকাপে প্রথম শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। এর আট বছর পর  ডিয়েগো ম্যারাডোনার একক নৈপুণ্যে দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতে আলবিসেলেস্তেরা। এরপর আরও দুবার ফাইনাল খেলছিল আকাশি-সাদা জার্সিধারীরা। ১৯৯০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে হেরে শিরোপাস্বপ্ন ভঙ্গ হয় আর্জেন্টিনার।

গত ৩৬ বছরে যারা চেষ্টা করেও পারেনি, শিরোপা জিতে নিজেদের সাফল্যের ভাগ তাদেরও দিচ্ছেন মেসি। তিনি লিখেন, ‘এই ট্রফিটি আমরা জিতেছি তাদের জন্যও, যারা আগের বিশ্বকাপগুলোতে এটি অর্জন করতে পারেননি, যেমন ২০১৪ সালে ব্রাজিলে। সেবারও প্রত্যেকের এটি প্রাপ্য ছিল, কারণ তারা ফাইনাল পর্যন্ত লড়াই করেছিল, কঠোর পরিশ্রম করেছিল এবং জিততে চেয়েছিল, ঠিক আমি যতটা পরিশ্রম করেছিলাম ও চেয়েছিলাম, ও রকম বাজেভাবে শেষ হওয়া ফাইনালেও আমাদের ট্রফিটি প্রাপ্য ছিল।’

বিশ্বকাপ মানেই আর্জেন্টিনার জন্য গ্যালারিতে হাজির ম্যারাডোনা। আকাশি-সাদাদের গোলে যেমন বাঁধনহারা উদ্‌যাপনে মেতে উঠতেন। তেমনই ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়তেন আলবিসেলেস্তেদের ফুটবল ঈশ্বর। শিরোপা জিতে মেসি স্মরণ করলেন বছর দুই আগে প্রয়াত হওয়া মহাতারকাকেও।

‘ডিয়েগোর (ম্যারাডোনা) জন্যও, যিনি স্বর্গ থেকে আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। এই সাফল্য তাদের সবার জন্য, যারা সবসময় ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে জাতীয় দলের পাশে থেকেছে, আমাদের চেষ্টা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে, এমনকি যখন সবকিছু চাওয়া অনুযায়ী হয়নি তখনও। আর অবশ্যই কোচিং স্টাফ এবং জাতীয় দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য, যারা আমাদের জন্য সবকিছু সহজ করতে দিনরাত কাজ করেছেন।’

আর্জেন্টিনার অধিনায়ক তার বার্তাটি শেষ করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে।

‘ব্যর্থতা অনেক সময় যাত্রা এবং শেখার অংশ। হতাশা, ব্যর্থতা ছাড়া সাফল্য পাওয়া অসম্ভব। হৃদয় থেকে সবাইকে অনেক ধন্যবাদ! চলো আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাই।’

সর্বশেষ খবর

Exit mobile version