Homeখেলাহাফ প্যান্ট পরে মাঠে খেলায় নারী ফুটবলারকে অপদস্থ, মারধর

হাফ প্যান্ট পরে মাঠে খেলায় নারী ফুটবলারকে অপদস্থ, মারধর

নারী হয়ে মাঠে জার্সি ও হাফ প্যান্ট পরে ফুটবল খেলায় প্রতিবেশীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড় সাদিয়া নাসরিন (১৭) ও তার সতীর্থরা। এ ঘটনায় সাদিয়া বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করলে গতকাল রোববার (৩১ জুলাই) একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সাদিয়া জেলা অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলার। সাদিয়া বলেন, পরিবার চাইতো না যে সে ফুটবল খেলুক। পরিবারের চোখ এড়িয়ে নিজ গ্রাম বটিয়াঘাটার তেঁতুলতলার এক ফুটবল একাডেমিতে অনুশীলন করত সাদিয়া। গত বৃহস্পতিবার নূপুর খাতুন নামের এক প্রতিবেশী তার খেলার ছবি তুলে পরিবারকে দেখিয়ে অপদস্থ ও আপত্তিকর নানা কথা বলেন।

শনিবার বিকেলে বিষয়টি নূপুরের পরিবারকে জানাতে গেলে সাদিয়াসহ তার তিন ফুটবলার সতীর্থ মঙ্গলী বাগচী (১৯), হাজেরা খাতুন (১৯) ও জুঁই মণ্ডল (১৭) হামলার শিকার হন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাদিয়া স্থানীয় ‘সুপার কুইন ফুটবল একাডেমিতে’ নিয়মিত অনুশীলন করে। গত বৃহস্পতিবার একাডেমিতে অনুশীলনের সময় নূপুর খাতুন তার ছবি তোলেন। সেই ছবি সাদিয়ার মা-বাবাকে দেখিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে মা-বাবা তাকে বকাঝকা করেন। ছবি তুলে মা-বাবাকে দেখানোর কারণ শনিবার বিকেলে জানতে চায় সাদিয়া। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের বাগবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে সাদিয়াকে গালিগালাজ করেন নূপুর। প্রতিবাদ করলে মারধর করেন। সাদিয়া বিষয়টি তার মা-বাবা, একাডেমির কোচ মুস্তাকুজ্জামান ও অন্যান্য খেলোয়াড়কে জানায়। তাঁরা সাদিয়াকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নূপুরের বাড়িতে যান। এতে নূপুরের পরিবারের লোকজন ক্ষুব্ধ হন। পরে নূপুরের ভাই আলাউদ্দিন, সালাউদ্দিন, বাবা নুর আলম, মা রঞ্জি বেগম ও আত্মীয় মনোয়ারা তাঁদের ওপর হামলা চালান।

এতে সাদিয়া, মঙ্গলী, হাজেরা ও জুঁই আহত হন। নুর আলমের লোহার রডে মাথায় আঘাত পান মঙ্গলী। পরে তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির কোচ মোসতাক আহমেদ বলেন, এ ধরনের ঘটনা নারীদের ফুটবলে এগিয়ে যাওয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। আর এমন ঘটনা যদি ঘটতে থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবে নারীদের পরিবার থেকে বাধা আসতে পারে। যদি এই ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকে, তাহলে দেখা যাবে ফুটবলে নারীরা এগিয়ে আসবে না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই বিষয়টি অবশ্যই দেখভাল করা উচিৎ। আর এ ধরনের পরিস্থিতি যেন আর না ঘটে প্রশাসনকে সতর্ক থাকা উচিৎ।

বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত কবির বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে মামলার এক আসামি নুর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর