Homeঅর্থনীতিবাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে ‘ব্লিস-২০২৩’ প্রদর্শনী

বাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে ‘ব্লিস-২০২৩’ প্রদর্শনী

বাংলাদেশ এখন চামড়া শিল্পের আন্তর্জাতিক সোর্সিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। দিনদিন এ খাতে দেশের রফতানি বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশে শুরু হতে যাওয়া চামড়া পণ্যের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘চতুর্থ বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার বা অ্যান্ড লেদারগুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো’ বা ‘ব্লিস-২০২৩’ বাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেন বক্তারা। লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এতে সভাপতিত্ব করেন।

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, করোনা মহামারি-পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাণিজ্য বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলো বিকল্প পরিকল্পনা ও নতুন সম্ভাবনাময় দেশগুলোর দিকে ধাবিত হচ্ছে। বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে সোর্সিংয়ের জন্য বাংলাদেশ এখন ক্রেতাদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা আন্তর্জাতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কট সত্ত্বেও এ খাতে বাংলাদেশের রফতানি বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে। বর্তমানে চামড়া শিল্প দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাত। সর্বশেষ বাংলাদেশ ১.৭ বিলিয়ন ডলার চামড়া খাতে রফতানি আয় করলেও আগামী বছর এর পরিমাণ ৩.০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সোর্সিং শো নতুন ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো, যারা চীন ও ভিয়েতনামের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে, তাদের আকৃষ্ট করবে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি তিনটি ব্রেকআউট সেশনও হবে, যেখানে দুশর বেশি শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, নীতি নির্ধারক এবং দেশি- বিদেশি অতিথিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন বলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর অবহিত করেন।

এলএফএমইএবির উপদেষ্টা এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সায়ফুল হক সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্যের অন্যতম ছিল চা, চামড়া ও পাট। কিন্তু পরবর্তীকালে ভেল্যু অ্যাডিশনের অভাবে চামড়া খাতে রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি। গতবছর এ খাতে রফতানি হয় ১.৭ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর এ রফতানি তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন বাংলাদেশ শুধু কাঁচা চামড়া ও স্বল্প মূল্যের চামড়াজাত পণ্যের রফতানিতে আটকে নেই, বাংলাদেশ এখন হাইভ্যালু লেদার প্রোডাক্ট রফতানি করছে বিশ্ববাজারে।

বিদেশে বাংলাদেশি চামড়াজাত পণ্যের সুনাম ও চাহিদা দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বশেষ গত বছরে ভারত ও জাপানে বাংলাদেশের চামড়া জাত পণ্যের রফতনি প্রবৃদ্ধি বিপুল পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশেও এ খাতের রফতানি সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এলএফএমইএবির পরিচালক এবং গোল্ডেন চ্যাং সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জেমস হো জানান, ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ১৪ সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করে বর্তমানে তার কোম্পানিতে কাজ করছেন ১৪ হাজার শ্রমিক।

বাংলাদেশের অধিকাংশ চামড়াপণ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠানেই পুরোপুরি কমপ্লায়েন্স নীতিমালা অনুসরণ করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ খাতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজমন্ত্রী টিপু মুনশি।

আগামী ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর বসুন্ধরা  ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের আন্তর্জাতিক মেলা শুরু হচ্ছে। এবারের মেলার নাম দেয়া হয়েছে: ‘বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদারগুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো-ব্লিস-২০২৩’।

এর আগে, এদিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলায় অংশ নেবেন হংকং, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, জাপান, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩টি দেশের ক্রেতারা।

সর্বশেষ খবর