Homeআন্তর্জাতিকইসরাইলের বিমান হামলায় নিশ্চিহ্ন গাজার রিমাল এলাকা

ইসরাইলের বিমান হামলায় নিশ্চিহ্ন গাজার রিমাল এলাকা

ইসরাইলের মুহুর্মুহু হামলায় কেঁপে উঠছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। পুরো গাজা এখন ধ্বংসের জনপদে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলের বোমা হামলায় উপত্যকাটির হৃদস্পন্দন নামে পরিচিত রিমাল অঞ্চলটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

রিমাল গাজার অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যারা ধনাঢ্য তারা এই রিমাল এলাকায় বসবাস করেন। বড় বড় কোম্পানি ও গণমাধ্যমের অফিসগুলো এই এলাকাতেই অবস্থিত।

গত কয়েকদিনে ইসরাইলি বিমান হামলায় রিমালের অ্যাপার্টমেন্ট টাওয়ারের দেয়াল, ফুটপাথের সারিবদ্ধ গাছ, গাজার প্রধান টেলিযোগাযোগ কার্যালয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় ভবন ও মসজিদ সবকিছু ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

রিমালের ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ী আলী আল-হিয়াক বলেন, ‘ইসরাইল সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আমাদের মন ভেঙে দিয়েছে।’

আল আকসা মসজিদে হামলা ও ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে বসতি নির্মাণ অব্যাহত রাখার জবাবে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরাইলে আকস্মিক হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনীও। যার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের।

মঙ্গলবারের (১০ অক্টোবর) বোমা হামলা ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়বহ। এরইমধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে স্থল আক্রমণের মাধ্যমে যুদ্ধ বিস্তারের কথা জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ত। ইসরাইলের বোমা হামলায় গাজা উপত্যকা এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাঁচদিনের সংঘর্ষে অন্তত ৯৫০ জন মানুষ নিহত এবং আরও পাঁচ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।

এদিকে, ইসরাইলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৭০০ এর বেশি মানুষ।

২০২১ সালে গাজায় ইসরাইলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের সবশেষ যুদ্ধেও রিমালে হামলা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবারের হামলা ছিল খুবই ভয়াবহ।

গাজা শহরের ৩০ বছর বয়সি সামান আশুর রিমালের উত্তরের একটি পাড়ার বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘বিমান হামলার শব্দগুলো একেবারেই ভিন্ন। এটি প্রতিশোধের শব্দ।’

ইসরাইলের বোমা হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক থেকে শুরু করে দোকানদার সবাই নিহত হয়েছে। ড্রোন ফুটেজে গাজা শহরের বিভিন্ন অংশ ময়লার গর্ত এবং ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে।

বিমান হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন একই এলাকার বাসিন্দা বাসিন্দা ইসা আবু সেলিম। তিনি বলেন,

আমাদের অর্থ -সম্পদ গেছে। আমার পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে। চার তলার পুরো বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে,। সবচেয়ে সুন্দর এলাকা তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।

এদিকে পঞ্চম দিনের মতো গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। মিসাইল, বাঙ্কার বাস্টার বোমার পাশাপাশি গাজায় এখন ‘নিষিদ্ধ’ সাদা ফসফরাস বোমা ব্যবহার করছে ইসরাইল। ফসফরাস ব্যবহারের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফিলিস্তিনি ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আল-জাজিরা বুধবার (১১ অক্টোবর) জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী গাজার আল-কারামা এলাকায় আগের দিন রাতে সাদা ফসফরাস বোমা ফেলেছে।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল-কারামার বোমা হামলার দৃশ্যসহ একটি ভিডিও এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেছে। তবে আল-জাজিরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদনটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

সর্বশেষ খবর