Homeরাজনীতিটাকা নিয়েছি প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করবো: জাপা মহাসচিব

টাকা নিয়েছি প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করবো: জাপা মহাসচিব

জাতীয় পাটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আসল ব্যথ্যা নির্বাচনের ফলাফল না, তাদের ধারনা আমরা অনেক টাকা পেয়েছি। কিন্তু সেই টাকা তাদের দেয়া হয় নাই। কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এমন কথা কেউ বলতে পারলে, চ্যালেঞ্জ করছি, পদত্যাগ করবো।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার বনানীতে জাপার চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

টাকা নিয়ে নির্বাচনে আসার অভিযোগ অস্বীকার করে চুন্নু আরও বলেন, এগুলো হলো গসিপিং। অনেকেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেহেতু আমাদের কথাবার্তা হয়েছে, ২৬টি সিট দিয়েছে। তাদের ধারনা আমাদের অনেক টাকা দিয়েছে, শত শত কোটি টাকা দিয়েছে… অথচ প্রার্থীদের কেন আমরা টাকা দিলাম না! এটা তাদের মনের আসল ব্যথা। ইলেকশন ঠিকমতো হয়নি এবং তারা পাস করেনি এটা আসল ব্যথা না। দুই একজন ছাড়া পরাজিত প্রার্থীদের আসল ব্যথা হলো—আমরা শত কোটি টাকা পেয়েছি, অথচ তাদের কেন দেইনি!

চেয়ারম্যানের উপদেষ্টার পদত্যাগের সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সাংগঠনিক নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে বহিষ্কার করা হয়। নেতা হয়ে জনসম্মুখে এমন মন্তব্য করা অমার্জনীয় অপরাধ।

নির্বাচনে ব্যর্থতা, দলের ব্যর্থতার দায়ভার নিতে আমরা রাজি। কিন্তু তার মানে এই না সবার সমানে এইভাবে কথা বলবেন, একটা অভিযোগ উঠেছে সেটা ঠিক আছে, নির্বাচনে আশানুরূপ ফল পাইনি। বাইরের থেকে ইন্ধন আছে এর পেছনে বলেন মহাসচিব।

নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে জাতীয় পার্টি (জাপা) টাকা নিয়েছে— এমন অভিযোগ তুলেছেন দলটির পরাজিত প্রার্থী ও বিক্ষুব্ধ নেতারা। তাদের এ অভিযোগ অস্বীকার করে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু আবারও বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বাংলাদেশের কোনো লোক যদি বলতে পারে… আমি বা চেয়ারম্যান কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। এমনটি প্রমাণ করতে পারলে আমি পদত্যাগ করব। শত কোটি টাকা পেলে তো বিদেশ চলে যেতাম। কেউ আমাদের টাকা দেয় নাই, ওরা ভেবেছিল টাকা পেয়েছি।

শত কোটি টাকা কে দিতে যাবে এমন প্রশ্ন রেখে জাপা মহাসচিব বলেন, সরকার আমাকে টাকা দেবে কেন? সরকার যদি আমাকে টাকা দেয় তাহলে এটা কী জানার বাকি থাকবে! শত-শত কোটি টাকা হজম করার মতো মানুষ তো আমি না। বাংলাদেশে আমার নিজস্ব একটা বাড়িও নেই। এত টাকা পেলে তো বিদেশ চলে যেতাম।

চুন্নু আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ভাঙছে, বিএনপিও ভাঙছে, এইটা চলমান প্রক্রিয়া। সব দলের মধ্যে ভাঙন আছে আবার গড়াও আছে।

এদিকে রোববার (১৪ জানুয়ারি) রাতে দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সমালোচনা করায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয় আরও দুই নেতাকে। তারা হলেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু ও ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরী।

এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি দলটির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ও প্রেসিডিয়াম মেম্বার সুনীল শুভ রায়কে দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

এদিকে নির্বাচনে বড় হারের লজ্জা নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা শীর্ষ পদে থাকা নেতাদের দোষাপরোপ করছেন। নির্বাচন ঘিরে দলের শীর্ষ পদে থাকা নেতারা নানা অনিয়মে জড়িয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। দুপুরে জাপার পরাজিত প্রার্থীরা বিশেষ সভা করেন রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটে। এতে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু জাপা চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের সমালোচনা করেন। তিনি এ সময় দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন বলেও শঙ্কা  প্রকাশ করেন। পরে সন্ধ্যায় তার পদ পদবি হারানোর তথ্য জানা যায়।

সর্বশেষ খবর