Homeসর্বশেষ সংবাদপদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু

পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু

মেহেদী হাসান, শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥

পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলার দৃশ্য দেখতে সেতুর দক্ষিণ পাশে শরীয়তপুরে জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে মঙ্গলবার সকাল থেকে মানুষের ঢল নামে। আমজনতার মধ্যে দেখা দেয় বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। মঙ্গলবার ভোর থেকেই পদ্মার দক্ষিণ প্রান্তে নাওডোবায় রেল সড়কের দু’পাশে হাজার হাজার জনতা ভীর জমায়। শরীয়তপুর-১ নির্বাচনী এলাকা পালং-জাজিরা ও শরীয়তপুর-২ নির্বাচনী এলাকা নড়িয়া-সখিপুর থেকেই প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। যারা পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ও সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর কর্মী-সমর্থক বলে জানা গেছে।

মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনের পর দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ট্রেনটি পদ্মা সেতু দিয়ে জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে পৌঁছলে ব্যানার-ফেস্টুনে সজ্জিত হাজার হাজার জনতা হাত নেড়ে, ঢোল বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। এসময় পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ইকবাল হোসেন অপু এমপি ও নাহিম রাজ্জাক এমপি লোকজনকে ট্রেন থেকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ট্রেনটি ধীরে ধীরে লাখো জনতার উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে অতিক্রম করে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়ে পদ্মা পাড়ে জড়ো হওয়া আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাসহ লাখো মানুষ।

এদিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৯ টায় দুই হাজার মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে শরীয়তপুর জেলা শহরের চৌরঙ্গী থেকে রওয়ানা দেন হাজার হাজার মানুষ। তারা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের প্লেকার্ড বহন করে স্লোগান ও সঙ্গীতের তালে তালে পদ্মাসেতু প্রান্তে গিয়ে জড়ো হয়। জাজিরা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোবারক আলী সিকদারের নেতৃত্বে হাজার হাজার লোক প্লেকার্ড-ব্যানার, ফেস্টুন হাতে মিছিল সহকারে হাজার হাজার জনতা পদ্মা সেতুর দক্ষিণপ্রান্তে জড়ো হয়। এছাড়াও জেলার বিভিণœ এলাকা থেকে দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেন দেখার জন্য ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য রেল সড়কের পাশে মহাসড়কে অবস্থান করে।

সবমিলিয়ে উচ্ছ্বসিত জনতার ঢল নামে পদ্মার দক্ষিণ প্রান্তে। এদিকে উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রীকে বহন করে আসা ট্রেন দেখে মহাসড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার জনতা হাত নেড়ে, ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জ্ঞাপন করেন। এসময় পুরো এলাকা মানুষের আনন্দ-উল্লাসে মুখরিত হয়ে ওঠে। লাখো জনতার আনন্দ-উচ্ছ্বাসে এক সময়ের ভাঙ্গন কবলিত পদ্মা পাড়ের আকাশ-বাতাস বিমোহিত হয়ে ওঠে। সরকারের উন্নয়নের নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো পদ্মা সেতু এলাকা। মঙ্গলবার পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের শুরুতে যাত্রী মধ্যে দেখা দেয় অভাবনীয় আনন্দ উচ্ছ্বাস। শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত পদ্মাসেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের দৃশ্য দেখার আনন্দে মেতে ওঠে। উঠতি বয়সের কিশোররা মোটরবাইক নিয়ে মহাসড়কের জাজিরা প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পযর্ন্ত গিয়ে আবার ঘুরে আসছে অনেকেই।

এ যেন নতুন এক ধরনের উৎসবের আমেজে মেতেছে তারা। উপস্থিত লোকজন জানান, এতোদিন ফেরিতে যে ভোগান্তি হতো এখন আর সেই ভোগান্তিতে পড়তে হবে না যাত্রীদের। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। কেউ কেউ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য স্মৃতিটুকু মুঠোফোনে বন্দী করছেন। ট্রেন চলাচল দেখতে নাওডোবাতে রাস্তার পাশে লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন পঁচাশি বছরের বৃদ্ধ তৈয়বালী মৃধা। কেমন অনভূতি লাগছে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বললেন, অভাবনীয় আনন্দ।

যা ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান ও তাঁর জন্য দোয়া করেন। জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি জাজিরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদার বলেন, এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের পদ্মা সেতু উপহার দিয়েছেন, একই সাথে রেল চলাচলের সুযোগ করে দিলেন। দেশে বড় বড় উন্নয়নের মেঘা প্রকল্পের মধ্যে এটি অন্যতম। আমরা শরীয়তপুরবাসী কি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবো তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। দেশের উন্নয়নে হাজার বছর বেঁচে থাকুক আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ খবর