Homeআন্তর্জাতিকহিলারি ক্লিন্টন ‘যুদ্ধাপরাধী’

হিলারি ক্লিন্টন ‘যুদ্ধাপরাধী’

ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে ইসরাইলকে একতরফা সমর্থন দেয়ায় তোপের মুখে পড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। জার্মানির বার্লিনে এক অনুষ্ঠানে গাজা ইস্যুতে ইসরাইলের পক্ষ নেয়ায় সাধারণ দর্শকরা তাকে যুদ্ধাপরাধী ও ভণ্ড বলে দুয়ো ধ্বনি তোলেন।

গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বার্লিনে ওয়ার্ল্ড ফোরাম ইভেন্টে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হিলারি ক্লিনটন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে জার্মানির বেসরকারি সংস্থা সিনেমা ফর পিস। অনুষ্ঠানে উপস্থাপক তার কাছে জানতে চান গাজায় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ায় তিনি মর্মাহত কিনা? জবাবে হিলারি ক্লিন্টন বলেন, ‘অবশ্যই, আমি এতে অবাক হইনি কারণ যুদ্ধে এমনটি ঘটে।’

হিলারির বক্তব্য শুনে এক দর্শক বলেন, আপনি মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছেন। যেখানে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনারা মানবাধিকার রক্ষার জন্য কিছুই করছেন না। আপনারা ইহুদিদের অধিকার রক্ষার জন্যও কিছু করছেন না। আপনারা বর্ণবাদী ইহুদিদের জন্য কাজ করছেন। লজ্জা করে না আপনার। ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতা দিন।

আরেক দর্শক হিলারিকে উদ্দেশ্য করে বলেন ‘ইসরাইল তাদের রক্ষা করছে না। তারা গণহত্যা চালাচ্ছে। যার জন্য আপনারা অর্থ দিচ্ছেন। আবার আপনারা নারী অধিকার নিয়ে কথা বলেন? আপনারা কী এ নিয়ে সিরিয়াস? কীসের নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলছেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। আর এখানে আপনি শান্তির জন্য সিনেমা নিয়ে কথা বলছেন। আদতে আমরা গণহত্যার সিনেমা দেখছি।’

দর্শকদের সারি থেকে আরেকজন হিলারিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি শত শত পাকিস্তানিকে হত্যা করেছেন। আপনি আফগানিস্তান, ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সমর্থন দিয়েছেন। আপনি যুদ্ধাপরাধী। আপনি ভণ্ড। লজ্জা করে না আপনার।

হিলিরি ক্লিন্টন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মিত্র হিসেবে পরিচিত। গত বছর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইউনূসের বিচার শুরু হওয়ার পর তার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন হিলারি। অভিযোগ রয়েছে, ড. ইউনূসের কথায় হিলারি নিজে আদেশ দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করেছিল।

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা মৃতুপুরীতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে রিলিফওয়েব এ খবর দিয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও প্রধান ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে গাজায় আন্তর্জাতিক সাহায্য অবাধে প্রবেশের সুযোগ দেয়ারও দাবি জানান তিনি।

গেব্রেয়াসুস বলেন, গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। গাজা এখন একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। সেখানকার বেশিরভাগ অঞ্চলই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ক্রমান্বয়ে অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

গেল বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় ইসরাইলে ১২০০ মানুষ নিহত হন। এছাড়াও ২৪০ জনেরও বেশি মানুষকে বন্দি করে নিয়ে যায় তারা। এরপর থেকে গাজায় বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। সাড়ে চার মাস পেরিয়ে গেলেও হামলা এখনো অব্যাহত রেখেছে তারা। বোমা হামলার পাশাপাশি উপত্যকাটিতে স্থল অভিযানও চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।

গেল সাড়ে চার মাস ধরে চলা ইসরাইলি বর্বরতায় গাজায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ৬৯ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সর্বশেষ খবর