Homeআন্তর্জাতিকসিরিয়ায় ভূমিকম্প: এক মায়ের সাহস দেখল বিশ্ব

সিরিয়ায় ভূমিকম্প: এক মায়ের সাহস দেখল বিশ্ব

ভয়াবহ ভূমিকম্প চলাকালীন অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন এক সিরীয় নারী। বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে বাঁচিয়েছেন তিন সন্তানসহ নিজের জীবন। সংগ্রহ করেছেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও। আশপাশের প্রতিবেশীরা সবাই মারা গেলেও অক্ষত আছে তার পরিবার। সেসব স্মৃতিই হাতড়ে বেরাচ্ছেন তিনি। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য।

সিরিয়ার ওই নারীর নাম উম কানান। জাবলেহ শহরের এই নারী ৩ সন্তানের মা। যিনি গেল সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ভয়াবহ ভূমিকম্পের সময় বাঁচিয়েছেন ৩ সন্তানকে। ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি দৌড়ে চলে যান তার সন্তানদের রুমে। ডেকে তোলেন তাদের। ততক্ষণ প্রচণ্ড মাত্রার ঝাঁকুনিতে দুলছে পুরো ভবন। এমন পরিস্থিতে ভয় না পেয়ে একটি ব্যাগে নিজের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পরিবারের ছবি নিয়ে আশ্রয় নেন আলমারি এবং রুমের মাঝের ছোট একটি জায়গায়।

উম কানান বলেন, যখন আমরা যখন বুঝতে পারলাম ভবনটি ভেঙে পড়ে যাচ্ছে, তখনও ভূমিকম্প হচ্ছিল। আশপাশে সবকিছু ভেঙে পড়ার বিকট শব্দ পাচ্ছিলাম। তখন আমার মনে হচ্ছিল, ‘আমি স্বপ্ন দেখছি। আমি কোনোভাবেই ওই ছোট জায়গাটি থেকে নড়তে পারছিলাম না। সোজা হয়ে বসতেও পারছিলাম না। অলৌকিকভাবে ওই ছোট জায়গাটি আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে।’

উম কানানের স্বামী পেশায় একজন সেনা কর্মকর্তা। কাজের সূত্রে দুর্ঘটনার দিন পরিবারের সঙ্গে ছিলেন না তিনি। আশপাশের সবাই মারা গেলেও প্রাণে বেঁচে আছেন উম কানানের পরিবার।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার স্বামী এবং সন্তানরা নিরাপদে আছে। দুর্ঘটনার দিন সৌভাগ্যক্রমে তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন। কারণ তিনি যদি আমাদের সঙ্গে থাকতেন তাহলে হয়তোবা সবাই আলমারি এবং রুমের মাঝের ওই ছোট জায়গায় আশ্রয় নিতে পারতাম না। আর আমার সঙ্গে থাকা ব্যাগটি আমি খুঁজে পাই মাথার কাছে। ব্যাগটিতে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে।’

স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে অবর্ণনীয় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২ দেশে। ভূমিকম্পের পর থেকে তুরস্কে উদ্ধার অভিযানে তৎপর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাচ্ছে না সিরিয়ার নাগরিকরা। সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়, খাবার, পানি ও নিরাপত্তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তুরস্ক হয়ে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ত্রাণ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো বাধামুক্ত করতে সীমান্ত খুলে দিতে বাশার আল আসাদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এখনো চলছে উদ্ধারকাজ। স্বজনের লাশের অপেক্ষায় অনেকেই ভিড় করছেন বিধ্বস্ত ভবনের সামনে।

সর্বশেষ খবর