Homeআন্তর্জাতিকজোট সরকার গড়তে প্রাথমিক ঐকমত্যে পিএমএল-এন ও এমকিউএম-পি

জোট সরকার গড়তে প্রাথমিক ঐকমত্যে পিএমএল-এন ও এমকিউএম-পি

পাকিস্তানে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে জোট সরকার গঠন অবধারিত বলে মনে করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যেই এরই মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো।
এরই ধারাবাহিকতায় মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তানের (এমকিউএম-পি) সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ৭৬টি আসন পেয়েছে। আর খালিদ মকবুল সিদ্দিকির এমকিউএম-পি পেয়েছে ১৭টি আসন। ডনের প্রতিবেদন মতে, রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাঞ্জাবের লাহোরে বৈঠকে বসেন পিএমএল-এন ও এমকিউএম-পি’র নেতারা।

এরপর নওয়াজ শরিফের দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকের পর জোট সরকার গঠনে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে ‘প্রাথমিক ঐকমত্যে’ পৌঁছেছেন দল দুটির নেতারা। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে একসাথে কাজ করব।

প্রতিবেদন মতে, বৈঠকে পিএমএল-এনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফ। আরও ছিলেন ইসহাক দার, মরিয়ম নওয়াজ, রানা সানাউল্লাহ, আয়াজ সাদিক ও খাজা সাদ রফিক। এমকিউএমের পক্ষে ছিলেন খালিদ মকবুল সিদ্দিকি, ড. ফারুক সাত্তার, কামরান তেসোরি ও মুস্তাফা কামাল।

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি তথা জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ করা হয়।

শনিবার পর্যন্ত ২৫৫ আসন পর্যন্ত ফল ঘোষণা করা হয়। বাকি ১০টি আসনের মধ্যে ৯টির ফল ঘোষণা করা হয় রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে।

একটি আসনে ফল স্থগিত থাকার ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মোট ২৬৪ আসনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ১০১টি আসন। এর প্রায় সবাই ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত। তবে নির্বাচনের মাঠে এগিয়ে থাকলেও সরকার গঠনে তৎপরতা বেশি পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) দলের।

পিএমএল-এন গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জানায়, জোট সরকার গঠনের ব্যাপারে তারা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপল’স পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে ‘প্রাথমিক ঐকমত্যে’ পৌঁছেছে।

তবে ওইদিনই জিও নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে পিএমএল-এনের এই দাবি নাকচ করে দেন বিলাওয়াল। বলেন, পিএমএল-এন বা পিটিআই বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।

২০২২ সালে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানের সরকার উৎখাতের পর জোট সরকার গড়েছিল পিএমএল-এন ও পিপিপি। তবে এখন জোট সরকার গঠনের ব্যাপারে পিপিপিকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে।

ক্ষমতা ভাগাভাগির সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে সতর্কভাবেই আলোচনা করছেন দলটির নেতারা। কিছু কিছু ক্ষেত্রেও গোপনীয়তা রাখা হচ্ছে। পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তান প্রদেশে জোট সরকার গঠনের বিষয়টিও আলোচনায় আছে।

ডন জানিয়েছে, রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) লাহোর ও ইসলামাবাদে বিভিন্ন দলের নেতাদের তৎপরতা বেশি দেখা যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রস্তাবিত জোট গঠনের প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে পিপিপির নেতা আসিফ আলি জারদারি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈঠকে অংশ নেবেন।

জোট সরকারের এই আলোচনার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট পদটি কে পাবেন, তা নিয়েও দর-কষাকষি হবে। সে কারণে এটি নিয়েও আলোচনা চলছে।

প্রতিবেদন মতে, জোট সরকার গঠনের বিষয়ে পিএমএল-এন ও পিপিপির মধ্যে আরও আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, প্রেসিডেন্ট কে হবেন, কোন দলের নেতাকে বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে, এমন আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

ইতিমধ্যে মডেল টাউনে অনুষ্ঠিত দলীয় এক বৈঠকে শাহবাজ শরিফ সব রাজনৈতিক দলকে পাকিস্তানের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বৈঠকের সভাপতি হিসেবে দেয়া বক্তব্যে শাহবাজ বলেন, ‘আমরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করব। নতুন সরকারের লক্ষ্য হবে জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে স্বস্তি দেয়া।’

সর্বশেষ খবর