Homeজেলাইজারা ছাড়া সওজের জায়গায় ব্যবসা

ইজারা ছাড়া সওজের জায়গায় ব্যবসা

ইজারা ছাড়াই দুই বছর ধরে নারায়ণগঞ্জে সড়ক ও জনপথের (সওজ) একটি জায়গা মালামাল রাখার স্থান (স্ট্যাক ইয়ার্ড) হিসেবে ব্যবহার করছে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রায় দুই একর পরিমাণ ওই জায়গা ইজারা ছাড়া ব্যবহার করায় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সওজ বলছে, জায়গাটি দখলমুক্ত রাখতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে সওজ নারায়ণগঞ্জের কার্যালয়। এই মহাসড়কের ঢাকাগামী অংশের দক্ষিণ পাশের কাঁচপুর সেতুসংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত সওজের ১ একর ৯০ শতাংশ জায়গাজুড়ে রয়েছে স্ট্যাক ইয়ার্ডটি। শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে বাল্কহেডের মাধ্যমে বালু এনে ওই জায়গায় মজুত করে রেখেছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (এনডিই)। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি সেখানে দুই বছর ধরে মালবাহী ট্রাক, ভেকু, যানবাহনসহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি রাখছে।

এ প্রসঙ্গে সওজের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দখলমুক্ত রাখতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে ভূমি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। ইজারা অনুমোদন হলেই প্রতিষ্ঠানটি সব অর্থ পরিশোধ করে দেবে।

তিন মাস ধরে এনডিই নিরাপত্তা সিগন্যালম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মো. শামীম। তিনি বলেন, এখানে এক পাশে তাঁদের গাড়ি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। অন্য পাশে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব বালু রাখা হয়েছে। এখানে ১২টি ড্র্রাম ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন ও যন্ত্রপাতি রয়েছে। ওই জায়গায় সওজের কোনো মালামাল নেই।

সওজের ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় উল্লেখ আছে, সওজের মহাসড়ক মেরামত, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন ও সম্প্রসারণকাজের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদার সওজের জায়গা স্ট্যাক ইয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে হলে ইজারা নিতে হবে। সরকার নির্ধারিত হারে ইজারা প্রদান করতে হবে। এতে এক বছরের ইজারার জন্য ভূমির মৌজামূল্যের ৫০ শতাংশ এককালীন টাকা সরকারি কোষাগারে দিতে হবে। পরবর্তী প্রতিবছরের জন্য এককালীন ফির ১০ শতাংশ টাকা দিতে হবে।

শিমরাইল এলাকায় জমির মৌজামূল্য প্রতি শতাংশ ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫৪ টাকা। সওজ সূত্রে জানা গেছে, এনডিইয়ের ব্যবহার করা ভূমির পরিমাণ ১ একর ৯০ শতাংশ। এই হিসাবে এক বছরেই ওই জায়গার ইজারামূল্য আসে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার ওপর। সঙ্গে ভ্যাট ও আয়কর দেওয়ারও শর্ত আছে।

এনডিই কোনো ইজারা ফি জমা দেয়নি, নেয়নি কোনো অনুমোদনও। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মাহতাব উদ্দিনের মুঠোফোনে অন্তত ১০ বার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তাঁর মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

শিমরাইল মৌজার শীতলক্ষ্যার তীরের জায়গাটি ছাড়াও একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ শহরের চানমারী এলাকায় সওজের আরও দুই একর জায়গা ইজারা অনুমোদন ছাড়া ব্যবহার করছে। ওই জমির পাশেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ছয় লেন উন্নীতকরণের প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়। এটিও নির্মাণসামগ্রী, যানবাহন, বিভিন্ন ভারী যন্ত্রপাতি রাখার স্থান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাইট অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ভূমির ইজারামূল্যও কয়েক কোটি টাকা।

সওজ নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি ইজারার জন্য আবেদন করেছে, সেটি প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর