Wednesday, March 22, 2023

জিনের অস্তিত্ব নিয়ে প্রতারণা, লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বিল্লাল

Date:

এ সম্পর্কিত পোস্ট

এমবাপ্পেকে অধিনায়ক করায় গ্রিজম্যানের অবসরের হুঁশিয়ারি

কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফ্রান্সের অধিনায়ক করায় চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন...

রকেট হামলায় পিটিআই নেতাসহ নিহত ১০

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি গাড়িতে রকেট হামলার ঘটনা...

এবার আইসিসির আইনজীবী ও বিচারকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার মামলা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির তিন...

বিশ্বকাপ ফুটবলে জয় লাভের স্বপ্ন দেখালেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা একদিন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলব।...

কিশোরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড...

কথায় আছে, ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে। ভোলার চরফ্যাশনের বিল্লাল হোসেনও যেন সেই ফকিরের প্রতিচ্ছবি। বিল্লালের কেরামতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ প্রকৌশলী, ডাক্তারদের মতো সমাজের উচ্চশিক্ষিত লোকজনের!

বাড়িতে জিনের উৎপাতের দোহাই দিয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রকৌশলীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি প্রকৌশলী রুহুল আমিনের মেয়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিল্লালকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

বাড়িতে জিনের উৎপাত আছে কিনা তা নাকি মুহূর্তেই বলে দিতে পারেন বিল্লাল। গুনে গুনে তিনি এও নাকি বলতে পারেন কতগুলো জিন, বাড়ির কোন কোন জায়গায় আস্তানা গেড়েছে। জিন বোতলবন্দি করতেও নাকি বিশেষ দক্ষতার অধিকারী তিনি। আর এই কেরামতির জন্য তার দরকার হয় একটি কোরআন শরিফ, লোহার বড় একটি পেরেক আর কিছু সুতা।

সুতা দিয়ে প্রথমে ধর্মীয় গ্রন্থটি তিনি চারকোনা করে বাঁধেন। মাঝ বরাবর লোহার পেরেক ঢুকিয়ে এক আঙুল দিয়ে ধরেন। অন্যপাশ থেকে আরেকজন। যদি কোরআন শরিফটি ঘুরতে থাকে তাহলে বাড়িতে জিনের অস্তিত্ব আছে। তবে বিল্লালের এই ঠকবাজি ধরে ফেলেন গোয়েন্দারা। কোরআন শরিফ পাল্টে আইনের একটি বই দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায় একই কাণ্ড। আইনের বইও ঘুরছে।

অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমি আগে কৃষিকাজ করতাম। মাছের চাষ করতাম। পরে এক ওস্তাদের কাছ থেকে এই কবিরাজি শিখেছি। মন্ত্র পড়ে জিন শনাক্ত করি এবং জিন ছাড়িয়ে দিই।

প্রকৌশলী রুহুল আমিনের মেয়ের অভিযোগ, বাড়িতে জিনের ব্যাপক উৎপাত আছে এমন দোহাই দিয়ে তার বাবার কাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিল্লাল। গাজীপুরে তাদের একটি বাড়িও তার নামে লিখে নেয়ার বন্দোবস্ত করেছে। বাকপ্রতিবন্ধী নাতিকে পানি পড়া দিয়ে সুস্থ করার জন্যও বিল্লালের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রচুর টাকা।

অথচ রুহুল আমিনের মেয়ে এবং মেয়ের স্বামী দুজনেই পেশায় চিকিৎসক। এত কিছুর পরেও ঘোর কাটে না প্রকৌশলী রুহুলের। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে চান অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বিল্লাল।

রুহুল বলেন, বিল্লালের তদবিরের ফলে আমরা সুস্থতা অনুভব করি। না হলে তো বিশ্বাস স্থাপন হতো না। আমার বাসার এসি, ফ্রিজসহ যাবতীয় জিনিসপত্র জিন অত্যাচার করে নষ্ট করে ফেলছে। বাধ্য হয়ে বিল্লালের কাছে এসেছি।

শুধু রুহুল আমিন নন, জাদুটোনা, আর ভূত-প্রেতের অসুখ সারাতে বিল্লাল অনেকের কাছ থেকেই মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ বলছে, শিক্ষিত মানুষের এমন অসচেতনতাকেই কাজে লাগায় বিল্লালের মতো কথিত কবিরাজরা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এই মূর্খ কবিরাজ বিভিন্নজনের কাছ থেকে বিকাশ এবং অন্যান্য মাধ্যমে লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রকৌশলী রুহুল আমিনের কাছ থেকেও গত এক মাসে এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই কবিরাজ।

গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এখনও অনেক মানুষ মন্ত্রে বিশ্বাস করেন। এতে শুধু যে তারা অর্থ হারায় তা না, পারিবারিকভাবেও নানান অশান্তি দেখা দেয়। এগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি। 

সর্বশেষ সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here