Homeসর্বশেষ সংবাদলালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষ

এস এম আলতাফ হোসাইন, লালমনিরহাট।।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেড়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে রেজিয়া বেগম নামের এক ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধাকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ গেছে তাছাব্বির হোসেন খন্দকার অনিক নামের এক ইউপি সদস্য ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
এ সময় সংঘর্ষে বৃদ্ধার জামাই ও মেয়ে ও মারাত্মক ভাবে আহত হয়। বর্তমানে তারা হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোমবার বিকালে আহত বৃদ্ধার জামাই নবিবর রহমান ইউপি সদস্য অনিককে প্রধান আসামী করে আরও চার জনের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে  এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় ওই উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দালালপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ায় কারনে  সোমবার রাতে ওই বৃদ্ধার জামাই নবিবর রহমান(৪২) কে আবারো মারধর করেন ইউপি সদস্য অনিক ও তার লোকজন।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য তাছাব্বির হোসেন খন্দকার অনিক(৪০) একই ইউনিয়নের দালালপাড়া এলাকার নুর নবী(৩২), নুর মোহাম্মদ(২০) ও নিলু(৩৪)।
আহতরা হলেন, উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের একই এলাকার মৃত আঃ কুদ্দুসের স্ত্রী ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধা রেজিয়া বেগম, তার মেয়ে সুখি বেগম(৪০) ও মেয়ে জামাই নবিবর রহমান(৪২)।
মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধা রেজিয়া বেগম ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। তার পাশের বেডেই শুয়ে আছেন মেয়ে আহত সুখি বেগম। আহত রেজিয়া বেগমের দুই হাতেই ব্যান্ডেজ।   তার কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি  হাউ মাউ করে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি বয়স্ক মানুষ।
ধান যেমন কইরা বাইরায় (মাড়াই করে) তেমন কইরা অনিক মেম্বার আমারে ও আমার মেয়েকে মারছে। আমি তার পা ধইরা কইছি আমাগো মাইরেন না। তখন সে আমারে পা দিয়া লাথি মাইরা ফেলাই দিছে। আমি ওর বিচার চাই বলে আবারো কান্না শুরু করেন।
এ সময় কথা হয় আহত বৃদ্ধার জামাই আহত নবিবর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি আমার বাড়িতে বেড়াইতে আসছে। অনিক ফকির পাড়া ইউপির ৪নং ওয়ার্ড সদস্য। আর আমার বাড়ি ৭ নং ওয়ার্ড। অনিক মেম্বারের সাথে আমার জমি নিয়ে দীর্ঘ  দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধের জেড়ে গত রবিবার সন্ধ্যায় অনিক মেম্বার ও তার লোকজন আমার বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় আমার স্ত্রী ও শাশুড়ি ঘর থেকে বের হয়ে বাধা দিলে তারা তাদেরকেও মারধর শুরু করেন। আমি বাড়ির পিছনে কাজ করছিলাম। চিৎকার শুনে ছুটে যাই। আমি সেখানে যাওয়া মাত্র আমাকেও মারধর শুরু করে। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে আমাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
আহত নবিবর রহমান আরও বলেন, আমি এ ঘটনায় গত সোমবার দুপুরে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই। পরে সন্ধ্যার দিকে ঔষুধ কেনার টাকা বিকাশ থেকে বের করতে হাতীবান্ধা ফিলিং ষ্টেশনের সামনে যাই। সেখানে অনিক ও তার লোকজন আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আর আমাকে বলে যে ব্যাটা তুই কার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেইস। তোকে মেরে ফেলবো বলে নানা রকম হুমকি-ধামকিও দেয় অনিক মেম্বার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য তাছাব্বির হোসেন খন্দকার অনিক বলেন, আমি নিজেই আহত। আমি কেন তাদেরকে মারতে যাবো। আমি তাদেরকে কোন মারধর করিনি। তারা যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা।
এ বিষয়ে ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। স্থানীয় ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনারুল ইসলাম বলেন, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সুস্থ হলেই বাড়ি যেতে পারবে, তবে দু তিন দিন সময় লাগতে পারে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, উভয় পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ খবর